যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কুইন্সে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে ১৯ বছর বয়সী বাংলাদেশি অভিবাসী উইন রোজারিও।
স্থানীয় সময় বুধবার (২৮ মার্চ) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
দ্য নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ওজোন পার্কে তার পরিবারের সঙ্গে যে অ্যাপার্টমেন্টে বসবাস করত সেখানেই এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা সেখানকার বাঙালি সম্প্রদায়ের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, কর্মকর্তারা ৯১১ নম্বরে কল করে এক ব্যক্তিকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বলে জানান। সেখানে পৌঁছানোর পরে, তারা ছুরি হাতে উইনকে দেখতে পান। পুলিশ প্রথমে টেজার দিয়ে তাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু তার মা অপ্রত্যাশিতভাবে এর মধ্যে এসে পড়লে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ফলে প্রাণঘাতি গুলি চালানো হয়।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই দুঃখজনক ঘটনার মধ্যে দিয়ে মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের সময় পুলিশের ভূমিকা সম্পর্কে নানা বিষয় তুলে ধরে। সমালোচকেরা যুক্তি দিয়েছেন যে বর্তমান পদ্ধতির যথেষ্ট সংবেদনশীলতার অভাব রয়েছে এবং পরিস্থিতি মারাত্মক হয়ে যাচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়, নিউইয়র্ক সিটিতে এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য উদ্যোগগুলো বাস্তবায়িত হয়েছে, যার মধ্যে একটি পরীক্ষামূলক কর্মসূচি রয়েছে, যেখানে মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক পেশাদারেরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পাশাপাশি প্রতিক্রিয়া জানায়। তবে, এই প্রচেষ্টাগুলো এখনও গোটা শহরে পুরোপুরি গৃহীত হয়নি, সংকট সমাধানের ক্ষেত্রে নানা ফাঁকফোকর রয়েছে। উইনের মৃত্যুই এর প্রমাণ।
কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট ডোনোভান রিচার্ডস মানসিক স্বাস্থ্য সেবা সম্প্রসারণের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। মানসিক স্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলায় সমাজের পদ্ধতিগত পরিবর্তনে আহ্বান জানান তিনি।
উইন রোজারিওর বাবা ফ্রান্সিস রোজারিও জানান, তাঁর পরিবার ১০ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে নিউইয়র্কে এসেছিল। উইনের স্বপ্ন ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়া। তবে পরিবারের গ্রিন কার্ড পেতে বিলম্বের কারণে উইনের সেই পরিকল্পনা আটকে যায়।
গ্রিন কার্ড ২০২৩ সালে অনুমোদিত হয়েছিল বলে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বক্তব্যের বিরোধিতা ভাইয়ের
এদিকে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিহতের ভাই উশতু রোজারিও পুলিশের বক্তব্যের বিরোধিতা করে বলেছেন, কর্মকর্তারা যখন গুলি চালায় তখন তাদের মা উইনকে ধরে রেখেছিলেন।
উশতু জোর দিয়ে বলেন, প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগ অপ্রয়োজনীয় ছিল।
তিনি আরও বলেন, দুজন সশস্ত্র কর্মকর্তাকে দেখেও উইন মারাত্মক হুমকিস্বরূপ কোনো পরিস্থিতি তৈরি করেনি।