বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি যদি গত মাসে (৭ জানুয়ারি) স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তার দলের সদস্যদের নির্বাচনে অংশ নিতে না দিতেন, তাহলে দেশের গণতন্ত্র হরণ করা হতো।
আসন্ন উপজেলা নির্বাচনও সকল সদস্যের জন্য উন্মুক্ত থাকবে বলে জানান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) গণভবনে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় সূচনা বক্তব্যে একথা বলেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, “আওয়ামী লীগের সকলের জন্য নির্বাচন উন্মুক্ত না হলে, শুধু নির্বাচনই কলঙ্কিত হতো না, দেশের গণতন্ত্রও ছিনতাই হয়ে যেতো।:
উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা ধরে রাখতে এ নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ ছিলো বলে উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। তিনি বলেন, “নির্বাচনের আগে আমরা যে নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেছিলাম, তা ভুলে গেলে চলবে না, এই অর্জন ধরে রাখতে হবে।”
“প্রতি বছর বাজেট প্রণয়নের সময় আমরা নির্বাচনি ইশতেহার অনুসরণ করি;” শেখ হাসিনা যোগ করেন। তিনি জানান, তার দল আসন্ন উপজেলা নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে, দলের সব সদস্যের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, গত ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকাকালীন, সাধারণ মানুষের জন্য কতটুকু কাজ করা হয়েছে; এর মধ্যে, কারা করতে পেরেছেন বা পারেননি, তাও খতিয়ে দেখা হবে।
“এর মাধ্যমে আমরা দেখবো জনগণ কাকে গ্রহণ করে;” বলেন শেখ হাসিনা।
আসন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যেকোনো ধরনের সংঘাতের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। বলেন, “আমরা কোনো ধরনের সংঘাত চাই না। এর জন্য দায়ী যেই হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে, ৩০০ আসনের ২২৩ টিতে জয়লাভ করেছে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা।
এই ফলের মধ্য দিয়ে, দুই তৃতীয়াংশের বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টানা চতুর্থবার সরকার গঠন করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ।
নির্বাচনে অংশ নেয় ২৮ টি দল। এর মধ্যে, ২৪ টি দল থেকে একজনও জয়লাভ করেনি। আর, হেরে যাওয়া প্রার্থীদের মধ্যে একজন ছাড়া বাকি সবাই জামানত হারিয়েছেন।
এ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ১১ জন এবং জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি ও কল্যান পার্টি থেকে ১ জন করে জিতেছেন।
এদের মধ্যে, জাতীয় পার্টির ১১ জনই জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে; যেসব আসন থেকে আওয়ামী লীগ তাদের প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিয়েছিলো, সেসব নির্বাচনী এলাকায়।
জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন নৌকা নিয়ে লড়ে, আর কল্যান পার্টিও তার আসনটি জিতেছে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে।
বিজয়ী ৬২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে ৫৮ জনই বিভিন্ন স্তরের আওয়ামী লীগ নেতা।