অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

শেখ হাসিনা: ‘বিজ্ঞানে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে নীতি প্রণয়ন জরুরি’


বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিজ্ঞানের ক্ষেত্রগুলোতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে, প্রয়োজনীয় নীতি প্রণয়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) নিউইয়র্কে, জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আয়োজিত বিজ্ঞান সমাবেশে নবম আন্তর্জাতিক নারী ও কন্যা দিবসের অনুষ্ঠানে এক ভিডিও বিবৃতিতে এ কথা বলেন শেখ হাসিনা।

“ন্যায্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই ভবিষ্যতের জন্য বিজ্ঞানের ক্ষেত্রগুলোতে নারী ও মেয়েদের অংশগ্রহণ বাড়ানো প্রয়োজন;” যোগ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, নারীরা যাতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে তাদের ক্যারিয়ার বেছে নেয়, সেজন্য অবশ্যই সঠিক নীতি ও প্রতিষ্ঠান থাকতে হবে।

বিজ্ঞানের ক্ষেত্রগুলোতে নারীদের নেতৃত্বে আসা উচিত বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আরো বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশের নারী বিজ্ঞানীদের কাজের স্বীকৃতি প্রদান এবং প্রণোদনার মাধ্যমে তাদের এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে সারাদেশে হাজার হাজার নারী ও মেয়েদের ক্ষমতায়ন করছে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জানান যে ডিজিটাল মার্কেটপ্লেসে নারীদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি দেখে তিনি আনন্দিত। তরুণীদের আইটি ফ্রিল্যান্সার হিসেবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, “প্রতিবন্ধী তরুণদের ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে তাদের জীবন পরিবর্তনের সুযোগ করে দিয়েছি।” তিনি আরো জানান, ভবিষ্যতের জন্য নারীদের প্রস্তুত করতে, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার সম্প্রসারণ করছে সরকার।

“আমরা সব উচ্চ বিদ্যালয়ের স্নাতকদের জন্য বিজ্ঞান ও আইসিটি বিষয়ে শিক্ষা নেয়া বাধ্যতামূলক করেছি;” শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন। বলেন, অতীতে উচ্চশিক্ষায়, বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায়, মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা সন্তোষজনক ছিলো না।

সমন্বিত প্রচেষ্টায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিজ্ঞান শিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা।

তিনি আরো জানান যে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ৪০ শতাংশ নারী; আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই হার ৩০ শতাংশ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের গবেষণা ও উদ্ভাবন বিষয়ের অনুদানগুলোতে নারীরা যাতে অগ্রাধিকার পান, তা আমরা নিশ্চিত করি। স্মার্ট বাংলাদেশ-এর ভিশন অনুধাবনের জন্য আমাদের তরুণ মেয়েদের প্রস্তুত হতে হবে।”

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নারী ও মেয়েদের শিক্ষার প্রতি সবসময় নিবেদিত থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা।

জাতিসংঘের তথ্য মতে, সারা বিশ্বে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিতের শাখার সব স্তরে বছরের পর বছর ধরে লিঙ্গ বৈষম্য বিরাজ করছে।

উচ্চশিক্ষায় অংশগ্রহণে নারীরা অভূতপূর্ব অগ্রগতি দেখালেও, এই ক্ষেত্রগুলোতে এখনো তাদের প্রতিনিধিত্ব পর্যাপ্ত নয়।

বলা হয়ে থাকে, লিঙ্গ সমতা সবসময় জাতিসংঘের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। লিঙ্গ সমতা এবং নারী ও মেয়েদের ক্ষমতায়ন শুধু বিশ্বের অর্থনৈতিক উন্নয়নেই নয়, টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০৩০ এজেন্ডা-এর সমস্ত উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

গত ২০১১ সালের ১৪ মার্চ জাতিসংঘের ৫৫তম অধিবেশনে শিক্ষা, প্রশিক্ষণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে নারীদের প্রবেশাধিকার এবং অংশগ্রহণের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন গ্রহণ করে নারীর অবস্থাবিষয়ক কমিশন।

এছাড়া, এই ক্ষেত্রগুলোতে নারীদের কর্মসংস্থান ও উপযুক্ত কাজের জায়গায় সমান সুযোগের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছায়।

পরে, ২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর উন্নয়নের জন্য বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবন বিষয়ে সাধারণ পরিষদে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়।

প্রস্তাবে, সব বয়সের নারী ও মেয়েদের জন্য বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে পূর্ণ ও সমান প্রবেশাধিকার ও অংশগ্রহণ এবং জেন্ডার সমতা, নারী ক্ষমতায়নের জন্য অপরিহার্য বলে সকলে সম্মত হয়।

XS
SM
MD
LG