অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ফ্রান্সের প্রতি শেখ হাসিনা: ‘উন্নয়ন কর্মসূচির স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে সহযোগিতা দরকার’


 প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুই। মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুই। মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩।

বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মসূচিগুলোর স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে, ফ্রান্সসহ সকল উন্নয়ন অংশিদারদের সহযোগিতা কামনা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) গণভবনে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুই। এ সময় শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।

সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের অবহিত করেন। নজরুল ইসলাম জানান যে শেখ হাসিনা বলেছেন, “বাংলাদেশের উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে আমাদের আরো অনেক দূর যেতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের ফ্রান্স এবং উন্নয়ন সহযোগীদের সহযোগিতা প্রয়োজন।”

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গ্রামীণ এলাকায় দারিদ্র্য, বন্যা ও খরার মতো বিষয়গুলোর বিরূপ প্রভাব কমে এসেছে। শেখ হাসিনা বলেছেন, “আজকের বাংলাদেশের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন।”

“দেশের প্রতিটি গ্রামে এখন বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার পাশাপাশি যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে। গ্রামীণ এলাকার অনেক পরিবর্তন হয়েছে এবং দারিদ্র্য উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে;” সাক্ষাৎকালে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

নজরুল ইসলাম জানান যে শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার দরিদ্র মানুষের জন্য গ্রামাঞ্চলে ফ্ল্যাট নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে। শহরাঞ্চলে এ ধরনের ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হচ্ছে।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে শেখ হাসিনা রাষ্ট্রদূতকে বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের অবশ্যই তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করতে হবে। “তারা মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানসহ নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। তারা শিক্ষা বা কাজের সঙ্গে জড়িত নয়;” যোগ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন যে প্রত্যাবাসন ছাড়া অপরাধ পুরোপুরি বন্ধ করা যাবে না। তিনি রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে আরো চাপ বাড়ানোর জন্য ফ্রান্স-সহ পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।

সাক্ষাৎকালে আটকে পড়া পাকিস্তানিদের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, তাদের চতুর্থ প্রজন্ম এখানে বসবাস করছে। “মনে হচ্ছে পাকিস্তান তাদের ফেরত নেবে না। তাই আমরা এখানে তাদের স্থায়ী পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে তাদের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণের পরিকল্পনা করছি;” জানান শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের গ্যাস খাতে বিনিয়োগের জন্য ফ্রান্সের গ্যাস কোম্পানিগুলোর প্রতি অনুরোধ জানান শেখ হাসিনা। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুই এয়ারবাস ক্রয় ও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণ-সহ দ্বিপক্ষীয় আরো কিছু বিষয়ে আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছেন স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম।

রাষ্ট্রদূত মাসদুপুই, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এর একটি বার্তা হস্তান্তর করেন।

দু'দেশের মধ্যে চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুই। বলেন, ২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফ্রান্স সফর এবং ২০২৩ সালে ম্যাক্রোঁর ঢাকা সফরের পর এ সম্পর্ক আরো জোরদার হয়েছে।

জলবায়ু ইস্যুতে রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুই বলেন, তার দেশ বাংলাদেশকে লস অ্যান্ড ড্যামেজ ইউটিলাইজেশন ফান্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে অগ্রগামী হিসেবে দেখতে চায়। তিনি বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ফ্রান্স বাংলাদেশকে গ্রিন এনার্জি ট্রানজিশন-এ সহায়তা করতে চায়।”

ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত আরো বলেন যে তার দেশ ব্লু ইকোনমি ও সাইবার নিরাপত্তায় বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে চায়।

XS
SM
MD
LG