অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বিএনপি: রিজভী বললেন ‘ভোট বর্জন করুন, বয়কট করুন’


বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী

আওয়ামী লীগ সরকারের পতন নিশ্চিত করতে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট বর্জনের জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি।

শনিবার(৬ জানুয়ারি) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির পক্ষে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ আহবান জানান। তিনি বলেন, “ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালন করুন।”

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “রবিবার (৭ জানুয়ারি) বাংলাদেশের ইতিহাসে আরেকটি একতরফা নির্বাচনের অন্ধকার অধ্যায় লেখা হতে যাচ্ছে।”

তিনি বলেন, “তাই, গণতন্ত্রকামী প্রতিটি ভোটারের প্রতি আহ্বান, গত ১৫ বছর ধরে যারা আপনাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে, তাদের অন্তত একদিনের জন্য বয়কট করুন।”

“বিশ্বাস করুন, আপনাদের একদিনের সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী সরকারের কবর নিশ্চিত হবে;” যোগ করেন রিজভী।

ভোটের সময় ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব।

তিনি বলেন, “আসুন গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করি এবং সর্বাত্মক ধর্মঘট সফল করি। আসুন আমরা সবাই ৭ জানুয়ারির ভোট বর্জন করি এবং নির্বাচন বয়কটের পক্ষে সোচ্চার হই।”

রিজভী অভিযোগ করেন, ডামি নির্বাচনী নাটকের মাধ্যমে গত ১৫ বছরের মতো আবার ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য একটি বিপজ্জনক খেলার আয়োজন করা হয়েছে।

“শেখ হাসিনা ‘নির্লজ্জভাবে’ সব ক্ষমতা ব্যবহার করে প্রহসনের খেলায় মেতে উঠছেন এবং ক্ষমতার লোভে অন্ধ হয়ে, গণতান্ত্রিক বিশ্বকে জোর করে ভোটার উপস্থিতি দেখানোর চেষ্টা করছেন;” উল্লেখ করেন রুহুল কবির রিজভী।

ওবায়দুল কাদের: বর্জনের সঙ্গে নাশকতার যোগসূত্র দেখতে হবে

এদিকে, জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনে বিএনপির আহবানের সঙ্গে চলমান নাশকতার মধ্যে কোনো যোগসূত্র আছে কি না; তা তদন্ত করে দেখতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

শনিবার (৬ জানুয়ারি) সকালে নিজ নির্বাচনী এলাকায় সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এ সময় তিনি বিএনপি-জামায়াতের গুজব ও অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমরা গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, ৭ জানুয়ারির নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি ও তাদের মিত্ররা নাশকতা, অগ্নিসংযোগসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে।”

বেনাপোল এক্সপ্রেসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নিন্দা জানান তিনি। বলেন, “বিএনপি-জামায়াত দেশকে ধ্বংস করতে চায়। তারা মানুষ পুড়িয়ে রাজনীতি করতে চায়।”

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছে এবং প্রতিনিয়ত নির্বাচন বিরোধী অপপ্রচার চালাচ্ছে।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ কখনো কোনো অশুভ শক্তির কাছে মাথা নত করেনি এবং ভবিষ্যতেও করবে না।”

বিএনপি যাতে নাশকতা চালাতে না পারে সেজন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।

উল্লেখ্য যে বাংলাদেশে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে ৪৪টি। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোসহ ২৭টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।

আর; বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি –এলডিপি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি, ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-বাংলাদেশ জাসদ; নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না।

এসব দলের অধিকাংশ বিএনপির সমমনা রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত এবং তারা বিএনপির সঙ্গে অভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে।

XS
SM
MD
LG