বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার রামুর একটি বৌদ্ধ বিহারে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় উসাইচেন বৌদ্ধ বিহারের (বড় ক্যাং নামে পরিচিত) সিঁড়ি পুড়ে গেছে।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলা সদরের চেরাংঘাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ঘটনার পর থেকে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে। শনিবার (৬ জানুয়ারি) সকালে পুলিশসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
আবু তাহের দেওয়ান জানান, শুক্রবার রাতে রামু উপজেলা সদরের চেরাংঘাটা এলাকায় অবস্থিত রাখাইন সম্প্রদায়ের দেড়শ বছরের পুরানো কাঠের তৈরি উসাইচেন বৌদ্ধ বিহারে (বড় ক্যাং) এ ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, পুরোহিতসহ অন্যরা প্রতিদিনের মতো ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ২টার দিকে আকস্মিক আগুন লেগে যায়। এ সময় বৌদ্ধ বিহারের ভেতরে অবস্থানকারীরা চিৎকার শুরু করে।
পরে, এলাকাবাসী এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে রামু ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
“আগুনে বৌদ্ধ বিহারটির ভেতরের কাঠের তৈরি একটি সিঁড়ি পুড়ে গেছে। তবে দ্রুত আগুন নেভানো সম্ভব হওয়ায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো গেছে;” বলেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু তাহের দেওয়ান।
তিনি জানন, এটি দুর্ঘটনা, নাকি নাশকতা, এ বিষয়ে পুলিশ এখনো নিশ্চিত নয়। বৌদ্ধ বিহারসহ আশপাশের সব সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্ত চলছে।
বড় ক্যাং বৌদ্ধবিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মং কিউ রাখাইন জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে বিহারে আগুন দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, আগুন ধরিয়ে দিয়ে এক ব্যক্তিকে চলে যেতে দেখা গেছে সিসি ক্যামেরায়। “এটি পরিকল্পিত ঘটনা, নাশকতার চেষ্টা;” বলেন মং কিউ রাখাইন।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর, ইসলাম ধর্ম অবমাননা সংশ্লিষ্ট একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়াকে কেন্দ্র করে বৌদ্ধ ধমাবলম্বীদের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা হয়েছিলো।
সে সময় ১৯টি প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দির ও অন্তত ২৬টি বসতঘরে একসঙ্গে হামলা চালানো হয় এবং আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।মন্দির ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরে লুটপাট করা হয়, অগ্নি সংযোগ করা হয়।
ঐ ঘটনার পর, রামু উখিয়া ও টেকনাফ থানায় ১৯টি মামলা দায়ের হয়। এজহারে ৩৭৫ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫ হাজারের বেশি মানুষকে অভিযুক্ত ব্যক্তি হিসেবে দেখানো হয়।
পরে একটি মামলা প্রত্যাহার করা হয়। আর ১৮ মামলায় নয়শ’ জনের বেশি অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থা।