বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন যে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায় বলেই সরকার পাঠ্যসূচিতে পরিবর্তন করেছে।
রবিবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে, প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি এ কথা জানান।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা চাই আমাদের দেশ বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাক। এ কারণেই ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যসূচিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে।”
শেখ হাসিনা জানান যে তিনি শিক্ষা ব্যয়কে বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করেন। বলেন, “শিক্ষার জন্য যা প্রয়োজন আমরা তা দেবো।”
“আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেভাবে শিক্ষা দেয় এবং যে ধরণের পাঠ্যক্রম ও পদ্ধতি অনুসরণ করে; বাংলাদেশে তেমন আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই;” বলেন শেখ হাসিনা।
তিনি দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য বাস্তব জ্ঞানভিত্তিক ব্যবহারিক শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন যে তিনি সব সময় আধুনিক জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার মাধ্যমে একটি জাতি গড়ে তুলতে চেয়েছেন।
এ কারণে সরকার কারিগরি শিক্ষা ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণে গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “আমরা আধুনিক প্রযুক্তি-জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার মাধ্যমে একটি জাতি গড়ে তুলতে চাই। আমরা এরই মধ্যে এজন্য অনেক কিছু করেছি।”
নিজেদের যথাযথ জ্ঞানে সমৃদ্ধ করতে মনোযোগসহ পড়াশোনা করার জন শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা বহুমুখী শিক্ষার মাধ্যমে জাতি গড়তে চাই। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন স্মার্ট ও দক্ষ জনগোষ্ঠী।”
দারিদ্র্য বিমোচনে শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরো বলেন, “আমরা বাংলাদেশকে দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।”
শেখ হাসিনা আরো বলেন, একমাত্র শিক্ষাই পারে দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে। এজন্য শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের প্রাক্কালে সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান।
বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ
এদিকে, শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের মাধ্যমে, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো সারা দেশে ৩ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার ৩২৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩০ কোটি ৭০ লাখ ৮৩ হাজার ৫১৭ কপি নতুন পাঠ্যপুস্তক বিতরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।পাঠ্যপুস্তকগুলো ইতোমধ্যেই উপজেলা পর্যন্ত পাঠানো হয়েছে।
গত ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত সারা দেশে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত বিনামূল্যে ৪৬৪ কোটি ৭৮ লাখ ২৯ হাজার ৮৮৩টি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করেছে।
এছাড়া, ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্রেইল বই বিতরণ করছে। পাশাপাশি, চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও সাদ্রি সংস্করণের বই বিতরণ করে আসছে।