যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত শ্রমমন্ত্রী (সেক্রেটারি অফ লেবার) জুলি সু'র সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান। এসময় তারা বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
ওয়াশিংটনে, যুক্তরাষ্ট্র সময় ১৪ ডিসেম্বর, যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম দপ্তর আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের ফাঁকে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তারা বাংলাদেশের শ্রমমান নিয়েও আলোচনা করেন।
বৈঠকে, রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান ও যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত শ্রমমন্ত্রী বাংলাদেশের বর্তমান শ্রম পরিস্থিতি এবং শ্রমিকদের অধিকার উন্নয়নে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেন।
তারা, বাংলাদেশের শ্রমমান নিয়ে দুই সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে সম্পৃক্ত থাকতে এবং পক্ষগুলোর উদ্বেগ আরো বুঝতে সম্মত হন।
রাষ্ট্রদূত ইমরান একই অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম দপ্তরের ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি থিয়া লি'র সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।
অধিকারকর্মী ও শ্রমিক সংগঠন প্রসঙ্গে ব্লিংকেন
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিংকেন বলেন, “আমরা বাংলাদেশি গার্মেন্টসকর্মী ও অ্যাকটিভিস্ট কল্পনা আক্তারের মতো মানুষের পাশে থাকতে চাই।”
ব্লিংকেন বলেছেন যে যুক্ত দূতাবাস তাকে সমর্থন করেছে বলেই তিনি আজ বেঁচে আছেন।
গত ১৬ নভেম্বর, ‘অ্যাডভান্সিং ওয়ার্কার এমপাওয়ারমেন্ট, রাইটস অ্যান্ড হাই লেবার স্ট্যান্ডার্স গ্লোবালি’-শীর্ষক প্রেসিডেন্সিয়াল মেমোরেন্ডামের রোলআউটে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিংকেন এ কথা বলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “তারা যখন নিজেদের পক্ষে আওয়াজ তোলে, সারা বিশ্ব তাদের সমর্থন করে।”
তিনি আরো বলেন, “যারা শ্রম অধিকারকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে, তাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে তারা একটি সুনির্দিষ্ট পার্থক্য তৈরি করতে পারে।
ব্লিংকেন বলেন, “আমরা শ্রম দক্ষতাসহ কর্মীদের জন্য বৃহত্তর কাজের সুযোগকে অগ্রাধিকার দিয়ে, শ্রমিকদের অধিকার সম্পর্কে জানার জন্য, আমাদের কর্মীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিদেশে কর্মী অধিকারকে এগিয়ে নেয়ার জন্য ফেডারেল সরকারের ক্ষমতাকে শক্তিশালী করবো।”
ব্লিংকেন জানান যে তারা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শ্রম অধিকারের প্রতি সম্মান রক্ষা ও প্রচারের জন্য সরকার, শ্রমিক, শ্রম সংস্থা, ট্রেড ইউনিয়ন, সুশীল সমাজ ও বিশ্বব্যাপী বেসরকারি খাতকে নিযুক্ত করবে।
তিনি বলেন, “এর মানে হলো আমাদের সব রাষ্ট্রদূত ও বিশ্বজুড়ে আমাদের বিভিন্ন দূতাবাসে থাকা সব মানুষ শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে জড়িত থাকবেন। যাতে, আমরা যা কিছু করি তাতে তাদের কণ্ঠ প্রতিফলিত হয়।”
যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দপ্তরের এক ঘোষণা অনুসারে, এই নতুন সম্পূর্ণ-সরকারি পদ্ধতিটি কর্মীদের ক্ষমতায়ন ও ইউনিয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
শ্রম নীতি নিয়ে উদ্বেগ নেই: আব্দুল মোমেন
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রেসিডেন্সিয়াল মেমোরেন্ডাম অন অ্যাডভান্সিং ওয়ার্কার এমপাওয়ারমেন্ট, রাইটস অ্যান্ড হাই লেবার স্ট্যান্ডার্ডস গ্লোবালি’ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
গত ৩০ নভেম্বর, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি। আব্দুল মোমেন বলেন, “বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা খুবই স্মার্ট ও সক্রিয়। আমাদের গতিশীল বেসরকারি খাতের ওপর আমার আস্থা আছে। এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।”
ড. মোমেন উল্লেখ করেন যে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির একটি প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্র। আর বাংলাদেশর বেসরকারি খাত তৈরি পোশাক রপ্তানি করে; আর, যুক্তরাস্ট্রর বেসরকারি খাত বাংলাদেশি পণ্য কেনে।
তিনি বলেন, “তারা আমাদের পণ্য কেনে, কারণ আমাদের পণ্যগুলো উচ্চ মানসম্পন্ন, দামে সস্তা ও সময়মতো পৌঁছে দেয়া হয়।”