অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম: বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত


বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় 'মিগজাউম' পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। ৪ ডিসেম্বর, ২০২৩।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় 'মিগজাউম' পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। ৪ ডিসেম্বর, ২০২৩।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় 'মিগজাউম' আরো উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।

সোমবার (৪ ডিসেম্বর) আবহাওয়া অধিদপ্তর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ঘূর্ণিঝড়টি সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫১০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩৯০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪০৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিলো।

ঘূর্ণিঝড় আরো উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং এটি আরো ঘণীভূত হতে পারে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার। যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায়, সাগর বিক্ষুদ্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এদিকে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। আর, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থান করা সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

ভারতের চেন্নাইয়ে ভারী বৃষ্টিপাত

এদিকে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে সোমবার (৪ ডিসেম্বর) ভারতের চেন্নাইয়ে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দক্ষিণে তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশে এবং পূর্বে ওড়িশার রাজ্য, বন্যা মোকাবেলার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে ভারতের চেন্নাইয়ে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। ৪ ডিসেম্বর, ২০২৩।
ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে ভারতের চেন্নাইয়ে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। ৪ ডিসেম্বর, ২০২৩।

ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সর্বোচ্চ ৯০-১০০ কিলোমিটার (৫৬-৬২ মাইল) বেগে দক্ষিণ উপকূলে আঘাত হানতে পারে। আইএমডির প্রধান কর্মকর্তা মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলেছেন, “মঙ্গলবার বিকালে অন্ধ্র প্রদেশের বাপটলার এলাকার স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে মিগজাউম।”

অন্ধ্র প্রদেশে সরকার সোমবার স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে এবং তামিলনাড়ুর কর্তৃপক্ষ চার জেলায় সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওড়িশার পূর্বাঞ্চলে বেশ কয়েকটি জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। মঙ্গলবার বৃষ্টিপাত আরো তীব্র হতে পারে।

তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাইতে ভারী বৃষ্টিতে রাস্তা ও গাড়ি ডুবে গেছে এবং শহরের কিছু অংশ প্লাবিত হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ। এছাড়া সেখানে ট্রেন ও বিমান চলাচল ব্যাহত হয়েছে।

রাজ্য সরকার জানিয়েছে, নিজস্ব দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী মোতায়েন করেছে তারা। উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ৫ হাজার ত্রাণ শিবির স্থাপন করা হয়েছে। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম.কে. স্ট্যালিন বলেছেন, রাজ্য কর্তৃপক্ষ ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলা করতে প্রস্তুত এবং জনসাধারণকে ঝড়ের প্রভাব শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে অবস্থান করতে বলেছেন তিনি।

XS
SM
MD
LG