কারাবন্দী যশোর জেলা যুবদলের সহসভাপতি, অসুস্থ আমিনুর রহমানকে চিকিৎসা দেয়া অবস্থায় হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের শুনানি শেষ হয়েছে। বাংলাদেশের উচ্চ আদালতের একটি বেঞ্চ, আদেশের জন্য সোমবার (৪ ডিসেম্বর) দিন ধার্য করেছেন। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ, রবিবার (৩ ডিসেম্বর) শুনানি গ্রহণ শেষে আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিএনপিপন্থী আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। তার সঙ্গে ছিলেন, বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। এর আগে রবিবার (৩ ডিসেম্বর) আমিনুর রহমানের স্ত্রী রাহাত আরা খানের পক্ষে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল রিট আবেদনটি দাখিল করেন। রিটে যুবদল নেতা আমিনুর রহমানের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার নির্দেশনা চাওয়া হয়।
গত ২৯ নভেম্বর, ‘ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে যুবদল নেতাকে’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি হাইকোর্টের নজরে আনেন বিএনপিপন্থী এক আইনজীবী। এসময় স্বপ্রণোদিত আদেশ চাইলে, আদেশ দেননি হাইকোর্ট। আদালত বিষয়টি রিট আবেদন হিসেবে দায়ের করতে বলেন। তারই ধারাবাহিকতায় রবিবার রিট করা হয়।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, “হাসপাতালের মেঝেতে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন এক ব্যক্তি। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় দুই পা ভাঁজ করে শুয়ে আছেন। ডান্ডাবেড়ি থাকায় দুই পা সোজা করতে পারছেন না। এক হাতে ঝুলছে হাতকড়া। অন্য হাতে ইনজেকশনের ক্যানোলা। দুই পায়ের মাঝখানে ঝুলছে ক্যাথেটার।”
ঢাকার কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে নিয়ে এসে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে আমিনুর রহমানকে। তার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) ভাইরাল হয়।
অসুস্থ আমিনুরের পরিপূর্ণ চিকিৎসায় বাধা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পরিবারের। দলীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ অক্টোবর রাতে যশোর-নড়াইল মহাসড়কে দুটি বাস থেকে ককটেল, লাঠি ও পেট্রোল জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ ৮৭ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা করে পুলিশ।
এই মামলায় অভিযুক্ত যুবদল নেতা আমিনুর রহমান মধু। এরপর হরতাল-অবরোধে নাশকতার আরো দুই মামলায় অভিযুক্ত হন তিনি। গ্রেপ্তার আতঙ্কে আত্মগোপনে যান। ২ নভেম্বর সদর উপজেলার আমদাবাদ গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত ১২ নভেম্বর যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা অবস্থায় আমিনুর রহমান মধু হৃদরোগে আক্রান্ত হন।
কারাগার থেকে তার দুই পায়ে ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া লাগিয়ে প্রথমে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায়, ওই রাতেই তাকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। পরদিন ১৩ নভেম্বর কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।