বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “অগ্নিসংযোগের সঙ্গে যারা জড়িত জনস্বার্থে তাদের বিরুদ্ধে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।” রবিবার (২৬ নভেম্বর) উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফল অনলাইনে প্রকাশকালে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “আমি মনে করি, যারা মানুষকে পুড়িয়ে মারে, জনগণের ও জাতীয় সম্পদের ক্ষতি করে, তাদের ছাড় দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।” তিনি বলেন, “বিএনপি ও তার মিত্ররা যতক্ষণ পর্যন্ত সঠিকভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করেছে, ততক্ষণ তারা কোনো সমস্যার সম্মুখীন হননি। বরং, তাদের ভাবমূর্তি আরো ভালো হয়েছে।”
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “কিন্তু, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর পর, তারা জনগণ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।” তিনি প্রশ্ন করেন, “যারা অগ্নিসংযোগে জড়িত বা যারা অগ্নিসংযোগের জন্য নির্দেশ দেয় বা অর্থ জোগায়, তাদের নিয়ে সরকারের কী করা উচিত?”
তিনি বলেন, “আমরা কি তাদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেবো, নাকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে? আমরা যদি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিই, তাহলে তারা অগ্নিসংযোগের মতো সহিংসতা চালিয়ে যাবে।”
সপ্তম দফা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শুরু
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর ডাকা দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়েছে রবিবার (২৬ নভেম্বর) সকাল থেকে। এই অবরোধ কর্মসূচি চলবে মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) সকাল ৬টা পর্যন্ত। এটা বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে ডাকা ৭ম দফা অবরোধ কর্মসূচি।
আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করতে এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে ইতোমধ্যে ৬ দফায় অবরোধ পালন করেছে বিএনপি। আগের অবরোধ কর্মসূচিগুলোতে অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। সহিংসতার আশঙ্কায়, এবারও রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে।
ঢাকা মহানগরের সড়কে রিকশার সংখ্যা বেশি; কিছু ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে।গণমাধ্যমের যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ওষুধ বহনকারী যানবাহন এ অবরোধের আওতাবহির্ভূত রয়েছে বলে জানিয়েছে বিএনপি।
২৮ অক্টোবর থেকে ২০৮টি গাড়িতে আগুন
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, গত ২৮ অক্টোবর থেকে রবিবার (২৬ নভেম্বর) ৬টা পর্যন্ত. বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচিতে মোট ২০৮টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।
এছাড়া, ২৩ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে রবিবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ৬টা পর্যন্ত বিরোধী দলগুলোর চলমান ৪৮ ঘণ্টার সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ চলাকালে গত ৬০ ঘণ্টায় তিনটি অগ্নিসংযোগের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।
এ সময় মোট তিনটি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়। এর মধ্যে ঢাকা শহরের ভেতরে একটি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক (মিডিয়া সেল) মো. শাহজাহান শিকদার। তিনি আরো জানান যে বাকি দুটি অগ্নিসংযোগ হয়েছে কুমিল্লার দাউদকান্দি ও বরিশাল বিভাগে। আগুনে দুটি বাস ও একটি ট্রাক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।