স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, বিরোধী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের জামিন নামঞ্জুরে সরকারের কোনো প্রভাব নেই।
তিনি বলেন, স্বাধীন বিচার বিভাগ এবং বিচারকেরা যথাযথ যাচাই-বাছাইয়ের পর সিদ্ধান্ত নেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস সচিবালয়ে তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আসাদুজ্জামান খান এ কথা বলেন।
বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ক্ষমতায় আসতে হলে নির্বাচনে আসতে হবে। অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতা করে সম্ভব নয়। ক্ষমতার পরিবর্তন চাইলে নির্বাচনে আসতে হবে।
আজাদুজ্জামান খান বলেন, বিএনপি থেকে কিছু নেতা জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে তৃণমূল বিএনপি ও বিএনএমের মতো দল গঠন করছেন। “আমরা তাদের বলেছি নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে, কোনো দল কোনো অযৌক্তিক সুবিধা পাবে না।”
তিনি বলেন, নতুন দলগুলোর ওপর বাইরের কোনো চাপ নেই; তারা স্বেচ্ছায় নতুন জোট গঠন করছে।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, “যখন গোয়েন লুইস নির্বাচনের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আমি তাঁকে বলেছি নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের সর্বত্র আনন্দঘন পরিবেশ রয়েছে। তবুও, আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো সতর্ক থাকবে যাতে কোথাও কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি না হয়।”
এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশের আগে প্রতিদিন গড়ে ৫৬৫টি মামলা হয়েছে। ২৮ অক্টোবরের পর প্রতিদিন গড়ে ৪৩৮টি মামলা হয় এবং প্রতিদিন ১২৭টি মামলা কমেছে।
তিনি দৈনিক গ্রেপ্তারের সংখ্যাও উল্লেখ করে বলেন, ২৮ অক্টোবরের আগে ছিল ১ হাজার ৯৫৬ জন, আর ওই তারিখের পরে থেকে ১ হাজার ৮১৬ জনে নেমে এসেছে।
উল্লেখ্য, বুধবার(২২ নভেম্বর) বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফয়সাল আতিক বিন কাদের জামিন আবেদনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
সোমবার (২০ নভেম্বর) এই জামিন আবেদনের শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সময় চেয়ে আবেদন করলে আদালত শুনানি ২২ নভেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করেন।
২ নভেম্বর মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদন করেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। জামিন আবেদনের পর ২০ নভেম্বর শুনানির দিন ধার্য করেছিলেন আদালত।
এর আগে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ২৯ অক্টোবর ঢাকার গুলশানের বাসা থেকে মির্জা ফখরুলকে ২৮ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুরের মামলায় আটক করে। আটকের প্রায় ১০ ঘণ্টা পর তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির ৫৯ নেতা-কর্মীকে অভিযুক্ত করা হয়।
পুলিশ ৩০ অক্টোবর মির্জা ফখরুলকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করলে ঢাকা মহানগর হাকিম তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।