অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

আওয়ামী লীগ চায় ভোটের মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তন হোক: শেখ হাসিনা


বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন যে তার দল সবসময় ভোটের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের পক্ষে। শনিবার (১৮ নভেম্বর) রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মনোনয়ন ফরম বিক্রির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা চাই জনগণের ভোটাধিকার অব্যাহত থাকুক। আর ভোটের মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তন হবে।” তিনি বলেন, “নির্বাচন বানচালের জন্য যারা অগ্নিসংযোগ করেছে, দেশের মানুষকে তাদের প্রতিহত করতে হবে। আমরা দীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি।”

যেসব রাজনৈতিক দল ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা; বলেন, “যেসব রাজনৈতিক দলের জনগণের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস নেই এবং রাজনৈতিক দল হিসেবে সুসংগঠিত নয়, তারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে।”

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “নির্বাচন বানচাল একটি দেশের জন্য ব্যাপক ক্ষতির কারণ হতে পারে।” তিনি উল্লেখ করেন, “২০১৩ এবং ২০১৪ সালে আমরা অগ্নিসন্ত্রাস প্রত্যক্ষ করেছি, যার ফলে জীবন ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।”

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে সচেতন থাকতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।তিনি বলেন, “২০০৯ সাল থেকে দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে এবং এর ফলে, অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি অর্জন করেছে বাংলাদেশ; উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে।”

শেখ হাসিনা বলেন, “হরতাল-অবরোধের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত জনগণকে নির্যাতন করে আনন্দ পায়। তবে, নির্বাচন বানচালের চেষ্টা, সংশ্লিষ্টদের জন্য কোনো ভালো ফল বয়ে আনবে না।”

তিনি বলেন, “কেউ যদি নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করে, অগ্নিসংযোগ অব্যাহত রাখে, তাহলে এর ফলাফল তাদের কোনো কল্যাণ বয়ে আনবে না। নির্বাচনে কাঙ্খিত প্রার্থীকে ভোট দেয়া ও নির্বাচন করা জনগণের অধিকার। দেশের জনগণ তাদের শাস্তি দেবে।”

শেখ হাসিনা বলেন, “আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাবো যে, অনেক সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জন করা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ কেউ যেন থামাতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।”

বাংলাদেশের দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক সংকট এখন চরমে পৌঁছেছে: বিএনপি

এদিকে, বাংলাদেশের দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক সংকট এখন চরমে পৌঁছেছে বলে উল্লেখ করেছে বিএনপি। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে,দলটির পক্ষে একথা বলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, “নাগরিকরা এখন একতরফা জাতীয় নির্বাচন প্রতিহত করতে প্রস্তুত।”

রুহুল কবির রিজভী বলেন, “প্রধান নির্বাচন কমিশনার, জনগণের স্বার্থ রক্ষা এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ না নিয়ে, শেখ হাসিনার কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন।” তিনি বলেন, “অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লাগাতার আন্দোলন এবং রাজপথে বিরোধী দলের অনেক নেতা-কর্মীদের ত্যাগ ও রক্ত উপেক্ষা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) একতরফাভাবে আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে।”

তিনি বলেন, “দেশের সুশীল সমাজ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও বিদেশি কূটনীতিকদের আবেদন উপেক্ষা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার একটি স্বৈরাচারী ও গণতন্ত্রবিরোধী সরকারের প্রধানের নির্দেশে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন।”

রিজভী বলেন, “একতরফা নির্বাচন প্রতিহত করতে, জনগণ তাদের জীবন বাজি রেখে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। জনগণের ক্ষমতা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলন সব স্বৈরশাসকের জন্য একটি সতর্ক বার্তা। দেশের দেড় দশকের রাজনৈতিক সংকট এখন এর ক্লাইম্যাক্সে আসছে।”

তিনি বলেন, “জনগণ বাংলাদেশের ত্রাণকর্তা এবং তারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ভোটাধিকারের অধিকার-সহ তাদের সব অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবে।” শেখ হাসিনাকে নিষ্ঠুর স্বৈরশাসক বলে উল্লেখ করেন রিজভী। বলেন, “ তার শোষণ-নিপীড়নের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পেতে বিশ্বের গণতন্ত্রকামী জনগণ বাংলাদেশের জনগণের সংগ্রামকে সমর্থন করছে। বিশ্ব বিবেক এখন জাগ্রত।”

রুহুল কবির রিজভী বলেন, “শেখ হাসিনা গণতান্ত্রিক শক্তিকে দমন করে, আওয়ামী ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন। গণতন্ত্রপন্থী শক্তি এখন শেখ হাসিনার বুলেটের লক্ষ্যবস্তু। মূলত, বাংলাদেশে গণতন্ত্র এখন মৃত।”

XS
SM
MD
LG