অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশের দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক সংকট এখন চরমে পৌঁছেছে: বিএনপি


বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী

বাংলাদেশের দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক সংকট এখন চরমে পৌঁছেছে বলে উল্লেখ করেছে বিএনপি। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে,দলটির পক্ষে একথা বলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, “নাগরিকরা এখন একতরফা জাতীয় নির্বাচন প্রতিহত করতে প্রস্তুত।”

রুহুল কবির রিজভী বলেন, “প্রধান নির্বাচন কমিশনার, জনগণের স্বার্থ রক্ষা এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ না নিয়ে, শেখ হাসিনার কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন।” তিনি বলেন, “অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লাগাতার আন্দোলন এবং রাজপথে বিরোধী দলের অনেক নেতা-কর্মীদের ত্যাগ ও রক্ত উপেক্ষা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) একতরফাভাবে আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে।”

তিনি বলেন, “দেশের সুশীল সমাজ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও বিদেশি কূটনীতিকদের আবেদন উপেক্ষা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার একটি স্বৈরাচারী ও গণতন্ত্রবিরোধী সরকারের প্রধানের নির্দেশে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন।”

রিজভী বলেন, “একতরফা নির্বাচন প্রতিহত করতে, জনগণ তাদের জীবন বাজি রেখে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। জনগণের ক্ষমতা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলন সব স্বৈরশাসকের জন্য একটি সতর্ক বার্তা। দেশের দেড় দশকের রাজনৈতিক সংকট এখন এর ক্লাইম্যাক্সে আসছে।”

তিনি বলেন, “জনগণ বাংলাদেশের ত্রাণকর্তা এবং তারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ভোটাধিকারের অধিকার-সহ তাদের সব অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবে।” শেখ হাসিনাকে নিষ্ঠুর স্বৈরশাসক বলে উল্লেখ করেন রিজভী। বলেন, “ তার শোষণ-নিপীড়নের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পেতে বিশ্বের গণতন্ত্রকামী জনগণ বাংলাদেশের জনগণের সংগ্রামকে সমর্থন করছে। বিশ্ব বিবেক এখন জাগ্রত।”

রুহুল কবির রিজভী বলেন, “শেখ হাসিনা গণতান্ত্রিক শক্তিকে দমন করে, আওয়ামী ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন। গণতন্ত্রপন্থী শক্তি এখন শেখ হাসিনার বুলেটের লক্ষ্যবস্তু। মূলত, বাংলাদেশে গণতন্ত্র এখন মৃত।”

এদিকে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা, মানুষ হত্যা ও অগ্নিসংযোগ করার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে বিএনপি ও জামায়াতের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রথম সভায় দেয়া বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, “ভোটের দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত।” ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে সব দলকে আহ্বান জানান তিনি। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “জামায়াত-বিএনপি অগ্নিসংযোগ করে মানুষ হত্যা করেছে এবং জানমালের ক্ষতি করেছে। তাই আমরা চাই তারা জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে তারপর নির্বাচনে আসুক। নির্বাচনের দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত।”

শেখ হাসিনা বলেন, “নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। আসুন নির্বাচনে অংশ নিন। জনগণের কাছে যান এবং জনগণের কাছে আপনাদের ভোট দিতে বলুন।” অগ্নিসংযোগের ভয় না পেয়ে নিয়ম মেনে যথাসময়ে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করায়, নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা। সময়মতো নির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়, সেজন্য দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। বলেন, “জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে এবং তাদের পছন্দের সরকার গঠনের জন্য এই নির্বাচন।”

তিনি আরো বলেন, “আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো; এই স্লোগান দিতে দিতে আপনারা ভোট দিতে যাবেন।” শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন যে তার সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করেছে এবং এখন সবাই এর সুফল পাচ্ছে। তিনি বলেন, “আশা করি আমরা তরুণদের সহযোগিতা পাবো “

নির্বাচনকে জনগণের সাংবিধানিক অধিকার উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “নির্বাচনের সময় এসেছে এবং জনগণ ভোট দেবে। কারো সাহস থাকলে তারা নির্বাচনে অংশ নেবে। জনসমর্থন থাকলে তারা ভোট পাবে।যে দল জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে তারাই সরকার গঠন করবে।”

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “তারা (বিএনপি-জামায়াত) জনগণের ওপর আস্থা রাখতে ব্যর্থ হয়ে হামলা চালাচ্ছে।”

XS
SM
MD
LG