অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

আরেকটি একতরফা নির্বাচন করতে চাইছে সরকার: রুহুল কবির রিজভী


বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী

পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহবান জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শনিবার (৪ নভেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই আহবান জানান তিনি। রিজভী অভিযোগ করেন, “আরেকটি একতরফা নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকার বিএনপির শীর্ষ থেকে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করেছে।”

রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে অনিচ্ছুক। কারণ, তিনি একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকার স্বাদ পেয়েছেন। তিনি একতরফা নির্বাচন করবেন, এমনকি রক্তপাত হলেও করবেন।” সরকার শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করার জন্য দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

রিজভী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী কিছুদিন আগে একটি বিদেশি সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, জনগণই তার মূল শক্তি। তাহলে নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করছেন না কেন? জনগণ যদি আপনাদের সঙ্গে থাকে, তাহলে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন করে আপনারা ক্ষমতায় আসতে ভয় পাচ্ছেন কেন?”

রুহুল কবির রিজভী বলেন, “আজকের আওয়ামী পুলিশ ছেলেকে না পেলে তার ভাইকে নিয়ে যায়; ভাইকে না পেলে তার বাবাকে নিয়ে যাওয়া হয়। সারা দেশ থেকে প্রতিনিয়ত এ ধরনের অমানবিক খবর আমাদের পেতে হয়। আর, এখন নতুন মডেলের কাল্পনিক মামলা দেখা যাচ্ছে। মামুন নামে এক যুবদল নেতাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর তার বিরুদ্ধে বরিশালে ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে মামলা করা হয়।”

রিজভী বলেন, “জাতীয় নেতাদের থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায়ে, তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের ঘটনা চলছে। গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালন করার জন্য বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করা হচ্ছে; তাদের হত্যা করা হচ্ছে।”

শনিবার (৪ নভেম্বর) বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায়, সারাদেশে বিএনপির ১৭৬ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান রুহুল কবির রিজভী।

নির্বাচন হতে হবে সংবিধান ও আইনের মধ্যে: আনিসুল হক

এদিকে, আগামীতে বাংলাদেশে নির্বাচন ও সরকার গঠন, সবই সংবিধান ও আইনের মধ্যে থেকে হতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন দেশটির আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। শনিবার (৪ নভেম্বর) জাতীয় সংবিধান দিবস উপলক্ষে রাজধানী ঢাকার একটি হোটেলে আয়োজিত সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। আনিসুল হক বলেন, “এর ব্যত্যয় হলে দেশ আবার পিছিয়ে পড়বে।” সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক
বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক

বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী বলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার দেয়া সংবিধানে জনগণকে প্রজাতন্ত্রের সব ক্ষমতার মালিক বানিয়েছেন। এই সংবিধানের ২৬-৪৭ অনুচ্ছেদে মৌলিক অধিকারের বিধান সন্নিবেশ করা হয়েছে। সেখানে সব নাগরিকের সুযোগের সমতা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।”

আনিসুল হক বলেন, “সংসদ কীভাবে গঠিত হবে, সরকার কীভাবে গঠিত হবে, নির্বাচন কীভাবে অনুষ্ঠিত হবে সবই সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আগামীতে যা কিছু হবে, সংবিধান ও আইনের মধ্যে থেকেই হতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে দেশ আবার পিছিয়ে পড়বে।”

আইনমন্ত্রী বলেন, “অর্ধশত বছরের অভিজ্ঞতা বলে, যখনই বাংলাদেশ সাংবিধানিক শাসন থেকে বিচ্যুত হয়েছে, তখনই দেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার ব্যাহত হয়েছে। দেশে অরাজক ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে এবং মৌলিক মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।”

তিনি বলেন, “বাঙালি জাতি স্বাধীনতার মাত্র ১০ মাসের মাথায় একটি গণমুখী ও বিশ্বমানের সংবিধান পেলেও এর পেছনের ইতিহাস অনেক বিস্তৃত। একটি গণমুখী সংবিধান পাওয়ার জন্য তৎকালীন পাকিস্তান আমলে সামরিক ও স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে অনেক আন্দোলন করতে হয়েছে।”

XS
SM
MD
LG