বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি আনসার ব্যাটালিয়নকে অপরাধীদের আটক, তল্লাশি ও মালামাল জব্দ করার ক্ষমতা না দেওয়ার সুপারিশ করেছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়।
আনসার ব্যাটালিয়ন বিল, ২০২৩ সোমবার সংসদে পেশ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
পরে বিলটি পরীক্ষার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
স্থায়ী কমিটি বিলের ৭ ও ৮ ধারাসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে কিছু সংশোধনের সুপারিশ করেছে।
সংসদে উত্থাপিত বিলের ৭ ধারায় আনসার ব্যাটালিয়নের দায়িত্বের ক্ষেত্রে বলা হয়েছিল, জননিরাপত্তামূলক কোনো কাজে সরকার বা সরকারের অনুমোদনক্রমে সরকারি কোনো কর্তৃপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী দায়িত্ব সম্পাদন করবে। এখানে সংশোধনী এনে ‘দায়িত্ব পালনে সহায়তা করবে’ যুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে।
৮ ধারায় বলা হয়েছিল, “…কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যের সামনে সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমোদনক্রমে অপরাধীকে আটক করে অবিলম্বে পুলিশের কাছে সোপর্দ করবে এবং ক্ষেত্রমতো জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট অথবা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশক্রমে আটক ব্যক্তির দেহ তল্লাশি; কোনো স্থানে প্রবেশ ও তল্লাশি এবং মালামাল জব্দ করতে পারবে”।
বিলের এই ধারায় সংশোধনী আনার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। সংসদীয় কমিটি সূত্র জানায়, এই ধারায় সংশোধনী এনে বলা হয়েছে, “...কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যের সামনে সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে”।
কমিটি সূত্র জানায়, এই প্রস্তাব এসেছে পুলিশের পক্ষ থেকে।
সংসদে উত্থাপিত বিলটিতে আনসার বাহিনীতে বিদ্রোহের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছিল।
কমিটি মৃত্যুদণ্ড বাতিলের সুপারিশ করেছে।
সংসদীয় কমিটির বৈঠক শেষে কমিটির চেয়ারম্যান বেনজীর আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ঐকমত্যের ভিত্তিতে এ সংশোধনীর প্রস্তাব করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “একটা আইন আছে, সেই আইনেই তারা পরিচালিত হবে। তারা এখতিয়ার ও ক্ষমতার পরিপ্রেক্ষিতে ফৌজদারি কার্যবিধি কোড ১৮৯৮–এর অধীনে ব্যবস্থা নিতে পারে”।
প্রস্তাবিত আইনে আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যদের অভ্যন্তরীণ অপরাধ বিচারের জন্য দুটি আদালত থাকবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, একজন অতিরিক্ত পরিচালকের নেতৃত্বে সামারি আনসার ব্যাটালিয়ন কোর্ট এবং অন্যটি মহাপরিচালকের নেতৃত্বে বিশেষ আনসার ব্যাটালিয়ন কোর্ট।
বিদ্রোহ, বিদ্রোহের প্ররোচনা, বিদ্রোহের ক্ষেত্র তৈরি, ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়ার মতো গুরুতর অপরাধের বিচার হবে বিশেষ আনসার ব্যাটালিয়ন আদালতে। এ ধরনের অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।
এ ছাড়া, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে ন্যূনতম পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের শাস্তিমূলক বিধান সম্পর্কিত অন্য গুরুতর অপরাধের বিচার হবে বিশেষ আদালতে।