প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মালবাহী ট্রেনের লোকোমাস্টার সিগন্যাল অমান্য করায় কিশোরগঞ্জের ভৈরব বাজার স্টেশনে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এ কথা বলেছেন রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) রেল ভবনের সভা কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।
নূরুল ইসলাম বলেন, ২০২০ সালে ট্রেনের একটি দুর্ঘটনা ঘটেছিল। সেখানে লুপলাইন অতিক্রম করার সময় দুটি ট্রেনের ধাক্কা লেগে একটি ট্রেনের পেছনের তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে হতাহত হয়েছিলেন যাত্রীরা। একইভাবে ২৩ অক্টোবর ভৈরব বাজার স্টেশনে লুপলাইন অতিক্রম করার সময় চট্টগ্রামগামী একটি মালবাহী ট্রেন এগারো সিন্দুর ট্রেনের পেছনের তিনটি বগিকে আঘাত করে এবং একটি বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার কারণে ঘটনাস্থলে অনেকে মৃত্যুবরণ করেন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়ও অনেকে মারা যান। আজও একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন এবং এ পর্যন্ত মোট ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি বলেন, ভৈরব থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য অনুযায়ী আহত হয়েছেন ৩৫ জন। এর মধ্যে ভৈরব থানা কমপ্লেক্স থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে রেফার করা হয়। তাদের মধ্যে একজন ঢাকা মেডিকেলে, ৬ জন পঙ্গু হাসপাতালে, একজন রেলওয়ে হাসপাতালে এবং একজন জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন।
নূরুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার সময় ফার্স্ট এশিয়া প্যাসিফিক রেল সামিটে অংশ নিতে মালোশিয়ায় ছিলাম। দুর্ঘটনার কারণে সেমিনার সংক্ষিপ্ত করে ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশে চলে আসি। আজ আমি নিজে ঢাকা মেডিকেল, পঙ্গু হাসপাতাল, চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ভর্তি রোগীদের দেখতে যাব এবং তাদের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেব।
নূরুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনায় যারা মারা গেছেন তাদের মৃত্যুর ক্ষতি কখনোই পূরণ হওয়ার নয় এবং এটা পূরণ করা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। তারপরও তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য রেলপথ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রত্যেক মৃত ব্যক্তির পরিবারকে ১ লাখ টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে। একই সঙ্গে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ব্যয় মন্ত্রণালয় থেকে বহন করা হবে এবং যথাসম্ভব আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।
তিনি জানান, ইতিমধ্যে দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনের জন্য তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আরেকটি বিভাগীয় পর্যায়ে কমিটি এবং আঞ্চলিক অফিস থেকেও একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যাবে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে তিনি ঢাকা মেডিকেল, পঙ্গু হাসপাতাল এবং জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে দুর্ঘটনায় আহত চিকিৎসাধীন রোগীদের সঙ্গে দেখা করেন। তাদের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন এবং প্রত্যেক রোগীকে আর্থিক অনুদান দেন।
নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং আহতদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান নূরুল ইসলাম।