ভারতের রাজধানী দিল্লির রাজ্য রাজনীতি মদকান্ডে উত্তাল। এই বিতর্কে জড়িয়ে গেছে রাজ্যের আম আদমি পার্টি (আপ) সরকারের নাম। অন্যদিকে মদ কাণ্ডে ধৃত আপ-এর মণীশ সিসোদিয়ার জামিন মামলায় ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল ইডি-সিবিআই। মণীশের বিরুদ্ধে কী প্রমাণ পেয়েছেন, কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে প্রশ্ন করে দেশের শীর্ষ আদালত। বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্ন, "শুধুমাত্র ব্যবসায়ী দীনেশ অরোরার বয়ান ছাড়া, আপনাদের কাছে কী প্রমাণ আছে?"
উল্লেখ্য, দিল্লি সরকারের প্রাক্তন আবগারি মন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া এখন তিহাড় জেলে বন্দি। একই মামলায় বুধবার ৪ অক্টোবর আপ সাংসদ সঞ্জয় সিংকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। সঞ্জয়ের গ্রেফতারির পরই উত্তাল হয়ে ওঠে দিল্লির রাজধানী। আপ সমর্থকরা দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখান। এরমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে জামিনের মামলার শুনানি ছিল।
বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি এসভিএন ভাট্টির বেঞ্চে মণীশের জামিনের মামলার শুনানি রয়েছে। সেই শুনানিতে প্রশ্নবাণে বিদ্ধ হয়েছে ইডি, সিবিআই--- দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাই।
বৃহস্পতিবার শুনানিতে বিচারপতি সঞ্জীব খান্না তার পর্যবেক্ষণে বলেন, "আপনারা (কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা) শুধু দু'টো অঙ্কের কথা বলছেন, ৩০ কোটি আর ১০০ কোটি। কিন্তু কে এই টাকা দিল? মণীশ যে মদকাণ্ডে টাকা নিয়েছেন তার প্রমাণ কোথায়? শুধু দীনেশ অরোরার বয়ান আছে আপনাদের কাছে। আপনাদের কাছে আর কোনও প্রমাণ আছে কি?"
উল্লেখ্য, দীনেশ অরোরা একজন ব্যবসায়ী। এই মদ কাণ্ডেই গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। যদিও বর্তমানে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। এই অভিযুক্তই এখন ইডি-সিবিআইয়ের সাক্ষী। বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার প্রশ্ন, "সরকারি সাক্ষীদের কথা কী করে বিশ্বাস করা যায়? সরকারি সাক্ষীরা কি সিসোদিয়াকে ঘুষ নিতে দেখেছেন? সরকারি সাক্ষীদের বয়ান আইনে গ্রহণযোগ্য হবে? সবকিছু তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে হওয়া উচিত।" বিচারপতি আরও বলেন, মদ কাণ্ডে টাকা যে একটা চেইনের মাধ্যমে হাতবদল হয়েছে তা এখনও প্রমাণ হয়নি।
মদকাণ্ডে ইডি-সিবিআইয়ের অভিযোগ, দুর্নীতির উদ্দেশে আবগারি নীতি তৈরিতে মদের ডিলারদের যুক্ত করা হয়েছিল। ২০২১-এ তৈরি মদনীতি এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে ডিলাররা ১২ শতাংশ অতিরিক্ত লাভ করতে পারেন। এই মামলায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি দীর্ঘ ৮ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয় দিল্লির তৎকালীন উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়াকে।