ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশসহ বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বাংলাদেশ বর্তমানে বিনিয়োগের উত্তম জায়গায় পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে কেউ কখনো ক্ষতিগ্রস্ত বা হতাশ হয়নি।
বুধবার (৪ অক্টোবর) ঢাকার গুলশানে রেনেসাঁ হোটেলে ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে পরিচালিত ইউরোপীয়ান কোম্পানিগুলোর বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় বাংলাদেশে ইতিমধ্যে যেসব বিদেশি প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়ী বিনিয়োগ করেছেন, তাদের সহযোগীদের বাংলাদেশের বিনিয়োগের ইতিবাচক পরিবেশ সম্পর্কে জানানোর অনুরোধ করেন টিপু মুনশি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে অবকাঠামোগত ও যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সব খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) প্রতিষ্ঠাসহ অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে এবং আরও কিছু প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে রয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশ বিনিয়োগের উত্তম জায়গায় পরিণত হয়েছে।
ইউরোপ ও বাংলাদেশ উভয়ের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনাকে একত্রে উন্মোচনে সংশ্লিষ্টদের কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমাদের যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে একটি পারস্পরিক লাভজনক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক নতুন মাত্রা পাবে। বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি করতে বাধাগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত সমাধানের জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
সরকারের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সম্পর্ক অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ উল্লেখ করে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে এসে ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ দেখে বিনিয়োগ করতে উৎসাহ দেন টিপু মুনশি।
তিনি বলেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বের হবে। এরপর স্বাভাবিকভাবেই আমাদের সামনে কিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে। কাজেই নিশ্চিন্তে বসে থাকার কোনো উপায় নেই। আসন্ন পরিস্থিতি ও সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় আমাদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।
টিপু মুনশি আরও বলেন, রানা প্লাজা ঘটনার পর বিভিন্ন নীতি পরিবর্তনের ফলে আমাদের পোশাকখাতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ফলে ইইউ বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে পারে। ইউরোপ ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পূর্ণ সম্ভাবনাকে উন্মুক্ত করে আমাদের বাণিজ্য বাধা, অবকাঠামো উন্নয়ন, গুণমান, শ্রম অধিকারসহ অসংখ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া।
তিনি বলেন, স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সব ধরনের সেবা নিশ্চিত করতে বিডা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। চলতি বছরের ডিসেম্বরে বিডার অনলাইন ওয়ান স্টপ সার্ভিস (ওএসএস) প্ল্যাটফর্ম থেকে বিনিয়োগকারীদের জন্য সব ধরনের সেবা স্বল্প সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করা হবে।
সেমিনারে বক্তব্য দেন ডিসিসিআইয়ের সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি।