বাংলাদেশের মাগুরা জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে পাটের দাম কমে গেছে। পাটচাষিরা বলছেন, সিন্ডিকেটদের প্রভাবে কমে গেছে পাটের দাম। ফলে হতাশ হয়ে পড়েছেন তারা। অনেকে আগামী বছর পাট চাষ না করার সিদ্ধান্তের কথা জানাচ্ছেন।
বর্তমানে প্রতি মণ পাট ১ হাজার ৮০০ থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে করে খরচ উঠছে না চাষিদের।
স্থানীয় পাট ব্যবসায়ীরা বলছেন, মহাজনরা কম মূল্য দিচ্ছে, তাই আমরাও কম মূল্যে ক্রয় করছি। এদিকে পাটচাষিরা বলছেন, সিন্ডিকেটদের প্রভাবে কমে গেছে পাটের দাম।
মাগুরা জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, শালিখা উপজেলা সদরের আড়পাড়ায় প্রতি শনি ও বুধবার বিভিন্ন এলাকা থেকে পাটচাষিরা পাট বিক্রি করতে আসেন। তবে কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পেয়ে অনেকেই পাট ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। আবার অনেকে অর্থের প্রয়োজনে বাধ্য হয়েই স্বল্প মূল্যে বিক্রি করে দিচ্ছেন। এর ফলে প্রত্যাশিত মূল্য না পাওয়ায় উৎসাহ হারাচ্ছেন তারা।
আড়পাডা ইউনিয়নের দিঘী গ্রামের পাটচাষি অছিউদ্দিন মোল্যা বলেন, এ বছর দুই একর জমিতে পাট বুনেছি। পাট বোনা থেকে শুরু করে ধোয়া ও শুকানো পর্যন্ত যে খরচ হয়েছে, মণ প্রতি ২ হাজার ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হলে সেই খরচ উঠবে।
বরইচারা গ্রামের পাটচাষি উৎপল বিশ্বাস বলেন, এভাবে পাটের দাম কমে যাবে আগে জানলে পাট বুনতাম না। প্রতি হাটে পাটের দাম কমে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন পাটচাষিরা।
পাটের দাম কম থাকায় হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের পাট যেন হয়ে উঠেছে কৃষকের গলার কাঁটা। না পারছেন ফেলতে, না পারছেন ভালো দামে বিক্রি করতে।
ফলে অনেকেই আগামী বছর পাটচাষ থেকে বিরত থাকবেন বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
তবে ভিন্ন কথা বলছেন পাট ব্যবসায়ীরা। পাটের রং ও মান ভালো না হওয়ায় দাম কমে যাচ্ছে বলে জানান তারা।
পাট ব্যবসায়ী খোকন সাহা বলেন, মহাজনদের কাছে কম মূল্য বিক্রি করতে হচ্ছে তাই আমরাও কমমূল্যে ক্রয় করছি।
অপর এক পাটব্যবসায়ী হাসিবুল কাজী বলেন, আমরা সাধারণত খুলনা ও কুষ্টিয়াসহ যেসব এলাকায় পাট বিক্রি করি সেখানে পাটের মূল্য কম থাকায় আমরাও কম মূল্যে ক্রয় করছি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর ৩ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ১৫ হেক্টর বেশি। আর ফলন হয়েছে হেক্টর প্রতি ১৫ বেল।
গত বছরের চেয়ে এ বছর ফলন তুলনামূলক কম হয়েছে বলেও জানান তারা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলমগীর হোসেন বলেন, পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পাটচাষিরা ভালোভাবে পাট জাগ দিতে পারেননি। ফলে পাটের গুণগত রং ও মান ভালো হয়নি। যার কারণে পাট থেকে প্রত্যাশিত মূল্য পাচ্ছেন না তারা।