বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, “একাত্তরের ভয়াবয় অভিজ্ঞতা এখনো আমাদের জাতির সম্মিলিত স্মৃতিতে প্রোথিত এবং এর প্রভাব একটি প্রজন্মকে আঘাত করেছে।” শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) কানাডার রাজধানী অটোয়াতে আয়োজিত এক ওয়েবিনারে তিনি একথা বলেন।
কানাডিয়ান মিউজিয়াম ফর হিউম্যান রাইটস (সিএমএইচআর) কর্তৃক, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর দ্বারা বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার স্বীকৃতি ও প্রদর্শনের বিষয়ে অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে এই ওয়েব সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেমিনারের শিরোনাম ছিলো, ডিনায়াল অ্যান্ড রেকগনিশন: দ্য কেস অফ বাংলাদেশ জেনোসাইড।
অটোয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন, বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ এবং কনফ্লিক্ট অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স রিসার্চ ইনস্টিটিউট কানাডার (সিআরআরআইসি) সহযোগিতায়; বঙ্গবন্ধু সেন্টার ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ ইন কানাডা (বিসিবিএস) এই আয়োজনে সহায়তা করে। ওয়েবিনারে বাংলাদেশ ও কানাডার গণহত্যার বিষয়ে বিশেষজ্ঞগণ অংশগ্রহণ করেন।
মাসুদ বিন মোমেন তার বক্তব্যে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যার দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব এবং একটি জাতিকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে সংগঠিত এই সহিংসতার ব্যাপকতার কারণে এর বৃহত্তর স্বীকৃতির গুরুত্ব তুলে ধরেন।
কি-নোট বক্তব্যে, অধ্যাপক ডক্টর অ্যাডাম মুলার গণহত্যার যারা শিকার হয়েছেন তাদের পরিচিতি গঠনে ও ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে স্বীকৃতির গুরুত্ব তুলে ধরেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যে গণহত্যা সংগঠিত হয়েছে, তার প্রত্যাখ্যান; যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এর শিকার হয়েছেন; তাদের ন্যায়বিচার ও প্রতিকারের দাবিকে দুর্বল করে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অধ্যাপক ডক্টর অ্যাডাম মুলার বলেন, “শাস্তি ও জবাবদিহি, ভবিষ্যতের গণহত্যা প্রতিরোধের মূল চাবিকাঠি এবং এক্ষেত্রে দায়মুক্তি ভবিষ্যৎ গণহত্যার ক্ষেত্রে অনুঘটক।”
কানাডার মিউজিয়াম ফর হিউম্যান রাইটসের প্রতিনিধি জেরেমি ম্যারন গণহত্যা এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অস্বীকার এবং বিকৃতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের গুরুত্বের ওপর জোর দেন।তিনি তাদের ‘ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স’ গ্যালারিতে ১৯৭১ সালের বাংলাদেশ গণহত্যা সম্পর্কিত নতুন বিষয়বস্তু তৈরির জন্য জাদুঘরের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
ওয়েবিনারের সকল বক্তা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক সংগঠিত ১৯৭১ সালের ভয়াবহতাকে ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যা বলে চিহ্নিত করেন।