ভারতের রাজধানী দিল্লিতে আগামী শনি ও রবিবার ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির শীর্ষ সম্মেলন চলাকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার মন্ত্রীদের বেশ কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বুধবার ৬ অগাস্ট দিল্লিতে মন্ত্রীসভার সদস্যদের বৈঠকে ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং বিদেশ সচিব বিনয় কোয়াত্রা।
সরকারি সূত্রের খবর প্রধানমন্ত্রী দুটি বিষয় মন্ত্রীদের মাথায় রাখতে বলেছেন। এক - সম্মেলনের দু' দিন মন্ত্রীদের সরকারি গাড়ি ভাগাভাগি করে ব্যবহার করতে হবে। অর্থাৎ এক গাড়িতে একাধিক মন্ত্রীকে যাতায়াত করতে হবে। সম্মেলনস্থল ভারত মণ্ডপমে যানজট এড়ানো এবং পার্কিংয়ের সমস্যার কথা বিবেচনায় রেখে এই পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
গাড়ি নিয়ে মন্ত্রীদের নির্দেশিকার কারণ, যাতে বিদেশি অতিথিদের যাতায়াতে কোনও বিঘ্ন না ঘটে। মন্ত্রীদের জন্য যেন বিদেশি অতিথিদের গাড়ি রাস্তায় আটকে না যায়।
দুই - মন্ত্রীদের অবিলম্বে জি-২০ অ্যাপ ডাউনলোড করে নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। ওই অ্যাপে সম্মেলনের আলোচনা, ভাষণ ইত্যাদি স্বীকৃত ভারতীয় ভাষায় মুহূর্তে অনুবাদ পাওয়া যাবে।
প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীদের বলেছেন, "আপনারা প্রতি মুহূর্তে অ্যাপের দিকে নজর রাখবেন। সম্মেলনের প্রতিটি বিষয় খেয়াল রাখবেন। বিশেষ করে আলোচনার দিকে। বিদেশি অতিথিদের সঙ্গে কথা বলার সময় খেয়াল রাখবেন সম্মেলনের খুঁটিনাটি সম্পর্কে।"
পর্যবেক্ষকদের মতে, এই ধরনের সম্মেলনের আয়োজন করতে ভারত কতটা পারদর্শী বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রথম সারির অতিথিদের সেই বার্তা দিতে চান প্রধানমন্ত্রী। ঘটনাচক্রে বুধবারই যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, "এই সময় ভারতই জি-২০ সম্মেলন আয়োজনের জন্য আদর্শ দেশ। যোগ্য হাতেই সম্মেলন আয়োজনের ভার দেওয়া হয়েছে।" সুনাক সম্মেলনে যোগ দিতে শুক্রবার ৮ অগাস্ট দিল্লি আসবেন বলে ঠিক আছে। ওই একই দিনে ভারতে পৌঁছবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
সরকারি মহলের দাবি, ১৯৮৩ সালে দিল্লিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে জোট বহির্ভূত দেশগুলির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তারপর জি-২০-র মতো বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলন ভারতে হয়নি যেখানে বিশ্বের কুড়িটি আর্থিকভাবে অগ্রসর দেশের রাষ্ট্র প্রধানেরা যোগ দিচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে বসছে জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির শীর্ষ সম্মেলন। ২০টি সদস্য দেশ ছাড়াও ওই দুদিন দিল্লিতে থাকবেন আরও কুড়িটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, বিদেশ মন্ত্রী, বিদেশ সচিবরা। প্রত্যেকের জন্য কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ৫ অগাস্ট থেকেই বিদেশি অতিথিরা দিল্লিতে পৌঁছতে শুরু করেছেন। অনেক মন্ত্রীকে বিদেশি অতিথিদের অভ্যর্থনা জানাতে বিমানবন্দরে যেতে হচ্ছে। বৃহস্পতিবার থেকে এই কারণে মন্ত্রীদের ব্যস্ততা বেড়ে যাবে। শুক্রবার থেকে দিল্লির প্রায় অর্ধেক এলাকায় সরকারি-বেসরকারি যান চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এজন্য দিল্লিবাসীর কাছে আগাম দুঃখ প্রকাশ করেছেন।