চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ঘুমিয়ে পড়ল ভারতের চন্দ্রযান ৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম আর রোভার ইঞ্জিন। ঘুমিয়ে পড়া মানে, তাদের যন্ত্রপাতি নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়েছে।
অবতরণের সময়ে ইঞ্জিন চালু করতেই লাফ দিয়েছিল সে। চাঁদের মাটি থেকে এক লাফে ৪০ সেন্টিমিটার উঠে গিয়েছিল। সেখান থেকে ফের তাকে সফ্ট ল্যান্ড করানো হয়। দ্বিতীয়বারও সফ্ট ল্যান্ড সফল হয়। ৩০-৪০ সেন্টিমিটার দূরে হাল্কা পালকের মতো নেমে আসে বিক্রম।
রোভার প্রজ্ঞানকে ঘুম পাড়ানো হয়েছিল আগেই। বিক্রমের যন্ত্রপাতি পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করছিল ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো।
এতদিন চাঁদের মাটিতে বিক্রম-এর কলকব্জায় কোনও ত্রুটি হয়নি। ইঞ্জিন চালু করেও দেখে নিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এখন নিশ্চিন্তেই তাকে হাইবারনেশনে পাঠানো হয়েছে। অর্থাৎ বিক্রমের যন্ত্রপাতি নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র ল্যান্ডার-এর রিসিভার সিস্টেম অন আছে। ২২ সেপ্টেম্বর তারিখে চাঁদে ভোরের আলো ফোটার পরে বিক্রম যাতে পৃথিবীর ডাক শুনতে পায় সেজন্যই এই ব্যবস্থা।
ল্যান্ডার মডিউলের পেলোডগুলি অবতরণের পর থেকেই কাজ করছে। ইলসা, চ্যাস্টে, রম্ভা এবং অ্যারের কৌশলে প্রতিনিয়ত চাঁদের পরিবেশ সম্পর্কে জানতে পারছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। চ্যাস্টে চাঁদের মাটির তাপমাত্রা মেপেছে, ইলসা দিয়ে চাঁদের কম্পন টের পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। লেজ়ার-ইনডিউসড ব্রেকডাউন স্পেক্ট্রোস্কোপ (এলআইবিএস) নমুনা সংগ্রহ করে তা লেজ়ার প্রযুক্তির মাধ্যমে পরীক্ষা করে চাঁদের মাটির উপাদানের বিশ্লেষণ করেছে। এলআইবিএস-এর মাধ্যমেই চাঁদের বুকে সালফার-সহ বেশ কিছু খনিজের হদিস পেয়েছে প্রজ্ঞান।
বিক্রম-এ রয়েছে লেজার রেট্রোরিফ্লেক্টর অ্যারে, রেডিও অ্যানাটমি অফ মুন বাউন্ড হাইপারসেনসিটিভ আয়নস্ফিয়ার অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ার বা ‘রম্ভা’। রম্ভা চাঁদের মাটিতে থাকা প্লাজমার ঘনত্ব মেপেছে। বিক্রমের সব যন্ত্রই সঠিক ভাবে কাজ করেছে এখনও পর্যন্ত। এইসব পেলোডগুলিকে গুটিয়ে ফেলা হয়েছে। যন্ত্রপাতি সব নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। প্রজ্ঞান ইতিমধ্যেই ঘুমের দেশে চলে গেছে। এবার তার পাশেই ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া হল বিক্রমকে।