বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন সংকটের বহুমাত্রিক সমাধান পেতে আমরা জি-২০ অংশীদারদের সঙ্গে একযোগে কাজ করার অপেক্ষায় রয়েছি। এ ছাড়া ভারতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অংশগ্রহণ ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কে আরেকটি পালক যোগ করবে।
বৃহস্পতিবার (৩১ অগাস্ট) ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন ঢাকা থেকে নয়াদিল্লি’ শীর্ষক আলোচনা সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আব্দুল মোমেন বলেন, ভারতের প্রেসিডেন্সির অধীনে জি-২০ কর্তৃক বহুপক্ষীয়তার জন্য স্থিতাবস্থা আর টেকসই নয় বলে যে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, তা একটি বড় পরিবর্তন।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ বহু-স্টেকহোল্ডারদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে জি-২০ প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান ও অর্থবহ অবদান রাখতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এবং তিনি জি-২০-এর বিভিন্ন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ততার প্রকৃতি ও স্তর সম্পর্কে নির্দেশনা দিয়েছেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী ২০১৬ ও ২০১৮ সালে যথাক্রমে জাপান ও কানাডায় জি-৭ আউটরিচ বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি সম্প্রতি জোহানেসবার্গে ব্রিকস আউটরিচ শীর্ষ সম্মেলনে আফ্রিকার বাইরে থেকে আমন্ত্রিত নেতাদের একজন হিসাবে অংশ নেন।
আব্দুল মোমেন বলেন, জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে শেখ হাসিনার আসন্ন অংশগ্রহণের অর্থ হলো, সেখানে আমন্ত্রিত নেতারা জি-২০-এর মূল সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে অংশ নিতে পারবেন।
আব্দুল মোমেন বলেন, আসন্ন জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ বিশ্বব্যাপী টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে আমাদের মূল্যবোধভিত্তিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত।
ভারতের জি-২০ প্রেসিডেন্সির কৃতিত্ব যে এটি গ্লোবাল সাউথের ইস্যুগুলোকে সামনে নিয়ে এসেছে। যেখানে তারা ইচ্ছুক অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের ওপর নির্ভর করতে পারে।
আব্দুল মোমেন বলেন, গ্লোবাল সাউথের বেশির ভাগ দেশকে নিছক প্রাপক বা ভোক্তা হিসেবে বিবেচনা করার মডেলের চেয়ে বেশি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বৈচিত্র্যময় পুনঃবিশ্বায়নের জন্য ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর যে আহ্বান জানিয়েছেন তা আমি স্বীকার করি।
ভারতের জি-২০ প্রেসিডেন্সি কর্তৃক চিহ্নিত ছয়টি বিষয়ভিত্তিক অগ্রাধিকারের প্রতি বাংলাদেশ পুরোপুরি সম্পৃক্ত।
আব্দুল মোমেন বলেন, আমরা ইতিমধ্যে ইন্টারন্যাশনাল সোলার অ্যালায়েন্স, ইন্টারন্যাশনাল বিগ ক্যাট অ্যালায়েন্স এবং কোয়ালিশন ফর ডিজাস্টার রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচারসের মতো বৈশ্বিক অংশীদারত্বে যোগ দিয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা আশা করি, স্মার্ট সরকার ও অর্থনীতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে ভারতের আন্তচালিত ডিজিটাল পাবলিক অবকাঠামো রপ্তানি থেকে শিক্ষা নেওয়া হবে। পরিবর্তে, আমরা বিশ্বাস করি যে, নারীদের নেতৃত্বাধীন উন্নয়নের বিষয়ে গ্লোবাল সাউথের বাকি অংশের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার জন্য আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অন্তর্দৃষ্টি রয়েছে।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অধিবেশনে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা এবং জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশের শেরপা হিসেবে দায়িত্বরত রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন বক্তব্য দেন। অন্যদেরর মধ্যে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ও জি-২০ এমপ্লয়ার অ্যাডভোকেট সেলিমা আহমেদ।
অনুষ্ঠানে নারী নেতৃত্বাধীন উন্নয়ন, পরিবেশ ও সবুজ উন্নয়নের জন্য জীবনধারা এবং ডিজিটাল পাবলিক অবকাঠামো বিষয়ে তিনটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।