যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নতুন অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বুধবার (৩০ অগাস্ট) সকালে এক গোলটেবিল বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। রাজধানী ঢাকার একটি হোটেলে ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ বিজনেস প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এই গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
টিপু মুনশি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। নতুন কিছু কোম্পানি দেশে বিনিয়োগ করতে চায়। তারা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সুবিধা ও অসুবিধার কথা বলেছেন। আমরা তাদের বলেছি যদি তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে তাহলে তাদের সব সমস্যার সমাধান করতে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি বলেন, বাজারে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রয় হবে। ভোক্তা ও ব্যবসায়ী উভয়ের স্বার্থ সংরক্ষণ হবে এটাই আমরা চাই। এ লক্ষ্যে আমরা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর দিয়ে বাজার মনিটরিং করে থাকি। অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে অনেককে জেল–জরিমানা করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির লোকবল কম থাকার কারণে পর্যাপ্ত অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয় না।
সার্বিক মূল্যস্ফীতি নিয়ে অপর এক প্রশ্নের উত্তরে টিপু মুনশি বলেন, যদি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা বিশ্লেষণ করেন তাহলে সহজেই বোঝা যায় সারা বিশ্ব একটি সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে ইংল্যান্ডের দোকানেও তিনটার বেশি টমেটো কেনা যাবে না বলে নির্ধারণ করে দেয়। জার্মানির দোকানগুলোতে তেলের বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়। এ অবস্থায় আমাদের মতো দেশ এ সংকটের বাইরে থাকতে পারে না। মুহূর্তের মধ্যে হয়তো সমাধান হবে না তবে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে যাতে করে গ্লোবাল এই দুরবস্থার মধ্যে দেশের মানুষ ভালো থাকে।
এর আগে গোলটেবিলে দেওয়া বক্তব্যে টিপু মুনশি বলেন, কোভিড মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের পটভূমিতে বৈশ্বিক যে সংকট দেখা দিয়েছে তা সরকার ও বেসরকারি খাতের মধ্যে শক্তিশালী অংশীদারত্বের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। বর্তমান পরিস্থিতিতে যে চ্যালেঞ্জগুলো দেখা দিয়েছে তা মোকাবিলায় সরকারি ও বেসরকারি খাত উভয়ের যৌথভাবে কাজ করতে হবে।
এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারত্ব বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি খাত সংশ্লিষ্টদের বাংলাদেশের পাশে থাকার আহ্বান জানান তিনি।
টিপু মুনশি জানান, ব্যবসা-বাণিজ্যে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ায় বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের আগামীর সিংহভাগ বিনিয়োগ বাংলাদেশে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
টিপু মুনশি বলেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণ করবে। এতে কিছু উন্নত অর্থনীতির দেশে আমাদের শুল্কমুক্ত বাজারে প্রবেশাধিকার ব্যাহত হবে। কিন্তু জাতি হিসেবে এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের। বাংলাদেশ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি এই যাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ও বেসরকারি সংস্থাগুলোও আমাদের পাশে থাকবে। এ ছাড়া, বাণিজ্য ও বিনিয়োগে আমাদের সক্ষমতা এবং অনুকূল পরিবেশের প্রতি আরও আস্থাশীল হবে।
এই ধরনের বাণিজ্য প্রতিনিধিদল পারস্পরিক সুবিধার জন্য সহযোগিতার পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বেঠকে আমেরিকান চেম্বার অফ কমার্স বাংলাদেশের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমদ এবং ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সভাপতি অতুল কেসাব, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম বক্তব্য দেন।