বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাওল হলের বিভিন্ন সংকট নিরসনের দাবিতে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের পরিচয়ে বিক্ষোভ করেছে ছাত্রলীগের একাংশ। পরে তারা হলের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়। বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) রাতে দুইঘন্টা ধরে চলে তাদের বিক্ষোভ। এ সময় টায়ার জ্বালিয়ে পাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। কয়েকজন শিক্ষক জানিয়েছেন, তিন ছাত্রলীগ বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করার জের ধরে এই বিক্ষোভ হয়েছে।
প্রক্টরের আশ্বাসে রাত সাড়ে ৯টার দিকে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। বিক্ষোভ চলাকালে তারা প্রভোস্ট-এর পদত্যাগসহ ৯ দফা দাবি তুলে ধরে। দাবির মধ্যে রয়েছে, পানির ট্যাংক নিয়মিত পরিষ্কার করা, গোসলের জন্য নির্মিত হাউস (ছোট সুইমিংপুল) নিয়মিত পরিষ্কার রাখা, ইন্টারনেটের সেবা নিশ্চিত করা, খেলাধুলার সরঞ্জাম নিশ্চিত করা, হলের চারপাশ পরিষ্কার রাখা, চলমান সংস্কারকাজ দ্রুত শেষ করা, হলের কর্মচারীদের কাজের তদারক করা এবং কর্মচারীদের গাফিলতির জন্য প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের নামে কর্মসূচি পালন করা হলেও, বিক্ষোভে অংশ নেয়া নেতা-কর্মীরা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াছের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার তিন অনুসারীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করার জেরে এই বিক্ষোভ হয়েছে বলে জানিয়েছেন হলের প্রভোস্ট-সহ কয়েকজন শিক্ষক।
জানা যায়, শিক্ষার্থীদের একটি দল সন্ধ্যা ৭টা থেকে বালতি, মগ ও বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে হলের ফটকের সামনে অবস্থান নেয়। কিছু শিক্ষার্থী ফটকের বাইরে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক আবরোধ। এ সময় তারা প্রভোস্টের পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে শ্লোগান দিতে থাকে। বিক্ষোভে অংশ নেয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, হলের সমস্যাগুলো দীর্ঘদিনের। এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষকে একাধিকবার জানানো হলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি।
আলাওল হলের প্রভোস্ট মোহাম্মদ ফরিদুল আলম বলেন, “সমস্যা-সংকটের কথা বলা হলেও, মূলত কয়েকজন শিক্ষার্থীর বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার না করায় আন্দোলন করা হচ্ছে। বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীরা এক সহকারী প্রক্টরকে মারধর করার চেষ্টা করেছিলেন।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ জানুয়ারি ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ ইলিয়াছের নেতৃত্বাধীন বিজয় নামে পরিচিত উপ-দলের ১২ নেতা-কর্মীকে সংঘর্ষ, কক্ষ ভাঙচুর এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সহকারী প্রক্টরের দিকে তেড়ে আসার অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়।
প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদার বলেন, “উপাচার্যকে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে জানানো হয়েছে।”