অবশেষে মহাকাশে দু’ভাগে ভাগ হয়েছে গেছে ভারতের চন্দ্রযান-৩। প্রপালসন মডিউল থেকে আলাদা হয়েছে ল্যান্ডার বিক্রম। চাঁদে অবতরণ এখন সময়ের অপেক্ষা। ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো জানিয়েছে ১০০ কিলোমিটার কক্ষপথ থেকে ধীরে ধীরে দূরত্ব কমিয়ে ৩০ কিলোমিটারে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখান থেকে চাঁদ অত্যন্ত কাছে। ধীরে ধীরে চাঁদের পিঠে নেমে যাবে ল্যান্ডার।
ইসরো জানিয়েছিল, ১৫৩ কিমি X ১৬৩ কিমি কক্ষপথে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই প্রবেশ করতে পেরেছিল চন্দ্রযান-৩। এখন উপর থেকে নীচের দিকে নামছে চন্দ্রযান-৩।
অভিযানের পরিকল্পনা অনুযায়ী, এটিই ছিল কক্ষপথ পরিবর্তনের শেষ পর্যায়। ইসরো সূত্রের খবর, ল্যান্ডার মডিউল মূল মহাকাশযান থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরে চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩০ কিলোমিটার উপরের কক্ষপথে পৌঁছবে এবং সেখান থেকে ধাপে ধাপে তাকে নামানো হবে চাঁদের মাটিতে। এখন চলছে ডিবুস্টিং প্রক্রিয়া।
ল্যান্ডার বিক্রমকে ডিবুস্ট করছেন ইসরো-র বিজ্ঞানীরা। অর্থাৎ ল্যান্ডারের গতি একটু একটু করে কমানো হচ্ছে। চাঁদের অ্যাপোলুন (চাঁদ থেকে দূরে) ১০০ কিলোমিটার কক্ষপথ থেকে পেরিলুন (চাঁদের একদম কাছে) ৩০ কিলোমিটার কক্ষে নিয়ে আসা হবে ল্যান্ডার বিক্রমকে। পেরিলুন হল চাঁদের সবচেয়ে নিম্নতম কক্ষপথ। এখানে পৌঁছনোর পরেই চাঁদের একদম কাছাকাছি চলে আসবে বিক্রম। এরপরেই শুরু হবে ‘সফট ল্যান্ডিং’ প্রক্রিয়া।
৩০ কিলোমিটার উপর থেকে হাল্কা পালকের মতো ২০ মিনিট ধরে চাঁদের দক্ষিণ পিঠের ৭০ ডিগ্রি দ্রাঘিমায় নামবে বিক্রম। ২৩ অগাস্ট সন্ধে ৫টা ৪৭ মিনিট নাগাদ চাঁদে অবতরণের প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছে ইসরো। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ল্যান্ডিংয়ের সময় বেগ সেকেন্ডে ২ মিটার হল সঠিক। এর চেয়ে বেশি সেকেন্ডে ৩ মিটার বেগ হলেও বিক্রম সেই ধাক্কা নিতে পারবে। গতবারের মতো গতিবেগ বেড়ে গেলে মুখ থুবড়ে পড়বে না। বিক্রমের পা অনেক বেশি মজবুত করা হয়েছে যাতে ল্যান্ডিংয়ের সময় যে ধাক্কা লাগবে তার বেগ সহজেই সইতে পারে।
এবার চাঁদে সফট ল্যান্ডিং করার জন্য যে জায়গা বেছে নেওয়া হয়েছে, সেটার পরিধি আগেরবারের থেকে বেশি রাখা হয়েছে। গতবার চাঁদে অবতরণের জন্য ল্যান্ডার বিক্রমের কাছে মাত্র ৫০০ মিটারX৫০০ মিটার জায়গা ছিল। এবার সেটা বাড়িয়ে ৪ কিলোমিটারX২.৪ কিলোমিটার করা হয়েছে।