বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের জনগণকে তাঁর সরকারের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “আমি দেশের প্রতিটি নাগরিকের জীবনকে অর্থবহ করতে চাই”।
শেখ হাসিনা বলেন, “আমি প্রত্যেকের জীবনকে অর্থবহ করতে চাই এবং এইভাবে আমার বাবার অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পূর্ণ করে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে চাই”।
বৃহস্পতিবার (১৭ অগাস্ট) বহুল প্রত্যাশিত সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করার সময় তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে পেনশন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশের ১৮ বছরের বেশি বয়সী সকল নাগরিককে পেনশন সুবিধার আওতায় আনার লক্ষ্যে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করেছিলেন এবং বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল থেকে উন্নত দেশে রূপান্তরিত হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের আস্থা, বিশ্বাস ও ভালোবাসা তাঁর শক্তির উৎস। “সুতরাং, এই বিশ্বাস এবং আস্থা রাখুন। আমি আপনাদের কাছ থেকে এটা চাই”।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে অনেক আঘাতের সম্মুখীন হতে হয়েছে—কোভিড-১৯ মহামারি, ইউক্রেন যুদ্ধের আঘাত, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা এবং বিশ্বব্যাপী উচ্চ মূল্যস্ফীতি, সেই সঙ্গে অগ্নিসংযোগ সহিংসতা।
শেখ হাসিনা বলেন, যেহেতু জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে, তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি এবং মানবসৃষ্ট দুর্যোগ সবকিছু মোকাবিলা করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
সর্বজনীন পেনশন প্রকল্পকে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসূচি হিসেবে বর্ণনা করে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার এমনকি তৃণমূল ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে তাদের উন্নয়ন পরিকল্পনার আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সর্বজনীন পেনশন স্কিম উদ্বোধনের দিনটি সত্যিই বাংলাদেশের জন্য একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ দিন। তিনি বলেন, দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
উল্লেখ্য, অংশগ্রহণকারী নাগরিকদের জন্য আজীবন পেনশন সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য সর্বজনীন পেনশন প্রকল্পের অধীনে মোট ৬টি পরিকল্পিত প্যাকেজের মধ্যে প্রগতি, সুরক্ষা, সমতা এবং প্রবাসী নামে ৪টি প্যাকেজ বৃহস্পতিবার প্রাথমিকভাবে চালু করা হয়েছে।
প্রগতি প্যাকেজ বেসরকারি চাকরিজীবীদের অন্তর্ভুক্ত করবে, অন্যদিকে সুরক্ষা স্ব-কর্মসংস্থান ব্যক্তিদের জন্য, নিম্ন আয়ের লোকদের জন্য সমতা এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য প্রবাসী প্যাকেজ গঠন করা হয়েছে। আর বাকি দুটি প্যাকেজ পরে চালু করা হবে।
১৮ বছরের বেশি বয়সী যেকোনো নাগরিক ৬০ বছর বয়সে না পৌঁছানো পর্যন্ত কিস্তি পরিশোধ করে অবসর জীবনের সময় পেনশন সুবিধা পেতে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারেন।
৫০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিও এই স্কিমে যোগ দিতে পারবেন তবে তাকে একটানা ১০ বছর ধরে কিস্তি দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জল হোসেন মিয়া অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এবং স্বাগত বক্তব্য দেন অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন।