সামান্য কারণে’ সাসপেন্ড করা হয়েছে কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীকে, এই অভিযোগে লোকসভা থেকে ওয়াকআউট করেন ইন্ডিয়া জোটের সাংসদরা। শুক্রবার ১১ অগাস্ট সংসদ চত্বরেই আম্বেদকর মূর্তির দিকে মিছিল শুরু করেন। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ছিলেন সেই মিছিলে। তিনিও গলা মেলান বাংলার সাংসদ অধীরের পক্ষে।
মিছিল থেকে স্লোগান ওঠে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার। কংগ্রেস সভাপতি এবং রাজ্যসভার বিরোধী দলের নেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে বলেন, "সামান্য কারণে সাসপেন্ড করা হয়েছে অধীরকে। তিনি শুধু ‘নীরব মোদী’ বলেছেন। নীরব মানে শান্ত। আপনি তাকে এর জন্য সাসপেন্ড করেছেন?" চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের কাছেও গণতন্ত্র রক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল, বৃহস্পতিবার লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাবে ভোটাভুটির সময় অধীরের বিরুদ্ধে ‘দুর্ব্যবহার’-এর অভিযোগ ওঠে এবং তার বিরুদ্ধে সাসপেনসনের প্রস্তাব আনা হয়। প্রায় বিরোধীশূন্য লোকসভায় পাশ হয়ে যায় সেই প্রস্তাব। সংবাদ সূত্রে জানা গেছে, প্রিভিলেজ কমিটির কাছে জানানো হয়েছে বিষয়টি। কমিটির রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত সাসপেন্ডই থাকবেন অধীর চৌধুরী।
শুক্রবার অধীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী। তার দাবি, প্রমাণ ছাড়াই বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ করে প্রায়শই সভার কাজে বিঘ্ন ঘটান অধীর। তার কথায় দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হলেও সে ব্যাপারে কখনও ক্ষমা চান না তিনি, এমন অভিযোগ প্রহ্লাদের। তিনিই অধীর চৌধুরীর আচরণকে ‘অসংসদীয়’ বলে দাবি করে তাকে সাসপেন্ড করার আর্জি জানান। তারপরেই লোকসভার কংগ্রেস নেতাকে সাসপেনশনের প্রস্তাব পাস হয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার লোকসভায় বক্তব্য রাখার সুযোগ পাননি অধীর। কংগ্রেসের তরফে কেবল তিনজন বক্তৃতা
দিয়েছিলেন, গৌরব গগৈ, মণীশ তিওয়ারি এবং রাহুল গান্ধী। যদিও লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা পরে অধীর চৌধুরীকে কথা বলার জন্য কিছুটা সময় দিয়েছিলেন।
সেই বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে তীব্র সমালোচনা করেন অধীর। প্রধানমন্ত্রী তখন ট্রেজারি বেঞ্চে বসে। অধীর বলেন, "কে বলে নীরব মোদী বিদেশে পালিয়ে গিয়েছেন? নরেন্দ্র মোদীই মণিপুর প্রশ্নে নীরব মোদী হয়ে এই দেশে বিরাজমান।" তিনি আরও বলেন, "প্রধানমন্ত্রী চাঁদ থেকে শুরু করে কুনোর চিতা নিয়ে কথা বলেন, অথচ মণিপুর নিয়ে কথা বলার সময় নেই ওর।"
এই ইস্যুতে অধীর সাসপেন্ড হওয়ায় শুক্রবার কংগ্রেসের তরফে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, "এটি গভীর উদ্বেগের বিষয়। এক সাংসদকে গতকাল কোনও উপযুক্ত কারণ ছাড়াই বরখাস্ত করা হয়। তিনি কেবল প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।"