গত তিন মাস ধরে উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপুর অশান্ত, জনজাতি দাঙ্গা বিধ্বস্ত। অগ্নিগর্ভ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা। মণিপুরে শান্তি ফেরাতে ব্যর্থ কেন্দ্র সরকার, এমনই অভিযোগ বিরোধীদের। বারবার এই অভিযোগে উত্তাল হয়েছে সংসদের চলতি বাদল অধিবেশন। বিরোধীরা মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতির দাবি করেছে। অনেকেই মনে করেছিলেন বৃহস্পতিবার ১০ অগাস্ট সংসদে বিরোধীদের অনাস্থা বিতর্কে প্রধানমন্ত্রীর জবাবি ভাষণে উঠে আসবে মণিপুর ইস্যু। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ নিয়ে শুক্রবার ১১ অগাস্ট কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, "মণিপুর জ্বলছে আর উনি (নরেন্দ্র মোদী) হাসছেন মজা করছেন।"
তিনি এদিন আরও বলেন, "গতকাল সংসদে প্রধানমন্ত্রী ২ ঘণ্টা ১৩ মিনিট বক্তৃতা দেন। শেষে মণিপুর নিয়ে ২ মিনিট কথা বলেন তিনি। কয়েক মাস ধরে মণিপুর জ্বলছে, মানুষ মরছে, ধর্ষণের মতো ঘটনাও ঘটছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হাসছেন, মজা করছেন। সেটা প্রধানমন্ত্রীর শোভা পায় না।"
এরপরই তিনি যোগ করেন, "ভারতীয় সেনা দু’দিনের মধ্যে মণিপুরের অশান্তি থামিয়ে দিতে পারে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী চাইছেন মণিপুর জ্বলুক এবং তিনি সেই আগুন নেভাতে চাইছেন না।"
বুধবার সংসদে বক্তৃতা দেওয়ার সময় রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, "‘ভারত মাতাকে মণিপুরে খুন করেছে বিজেপি সরকার।" শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকেও একই কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। রাহুলের কথায়, ‘"প্রধানমন্ত্রী অন্তত মণিপুর যেতে পারেন। কথা বলতে পারেন। কিন্তু আমি তাঁর মধ্যে এমন কোনও উৎসাহ দেখছি না। মনে হচ্ছে, মোদী মণিপুরে যেতে চাইছেন না।"
রাহুল এদিন মণিপুর নিয়ে বলতে গিয়ে বলেন, "মণিপুর এখন আর এক রাজ্য নেই। দুই রাজ্যে ভাগ হয়ে গিয়েছে। আমরা মণিপুরে পৌঁছে মেইতেই এলাকায় যখন গেছিলাম, তখন আমাদের বলা হল - আপনাদের নিরাপত্তায় যেন কোনও কুকি না থাকে। যদি থাকে আমরা মেরে দেব। আবার যখন কুকি এলাকায় গেলাম তখন বলা হল যেন কোনও মেইতেই না আসে, তাহলে গুলি করে মেরে দেব।"
রাহুল গান্ধীর কথায়, "মণিপুরে নারী ও শিশুদের উপর অত্যাচার হচ্ছে। কিন্তু মোদীকে গতকালকে সংসদে বলতে দেখে খারাপ লাগছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কী কাজ সে বিষয়ে মোদীর পরিষ্কার ধারণা আছে কিনা বুঝতেই পারছি না। উনি চাইলে ৩-৪ দিনেই ঝামেলা থামিয়ে দিতে পারেন।"