আওয়ামী লীগ ভয় ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ‘শান্তি’ সমাবেশের নামে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কর্মসূচিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশের নামে ইচ্ছাকৃত আমাদের প্রতিটি কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে। যেদিন আমরা কর্মসূচি দিয়েছিলাম, সেদিনই তারা পাল্টা কর্মসূচি দিয়েছিল। আমরা যখন আমাদের কর্মসূচি পরিবর্তন করেছিলাম তখন তারা একই কাজ করেছিল। তারা প্রতিহিংসাপরায়ণ ও আতঙ্কিত, তারা অবশ্যই এই ধরনের কাজ করতে পারে”।
বুধবার (৯ অগাস্ট) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিলে রাজনীতি থেকে তারা নিশ্চিহ্ন হবে বলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগ। গণতন্ত্র, দেশ ও সার্বভৌমত্বের স্বার্থে আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করা জাতীয় দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিএনপি অগ্নিসংযোগ ও হত্যাকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা (সাংবাদিকরা) সবকিছু ভালোভাবে দেখছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য কতটা সত্য তা ভালো বলতে পারবেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, তাদের দল গত কয়েক বছর ধরে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছে। “আমরা দীর্ঘদিন ধরে সচেতনভাবে যেকোনো ধরনের সহিংসতা এড়াতে চেষ্টা করছি”।
বন্যা পরিস্থিতির অবনতি মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতার জন্য তিনি সমালোচনা করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। এই সরকার অনেক মেগা উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে, কিন্তু তারা বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারছে না”।
পরে মির্জা ফখরুল ঘোষণা করেন, তাদের দল এক দফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে শুক্রবার (১১ অগাস্ট) বিকেলে রাজধানীতে গণমিছিল করবে এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন করতে সরকারকে বাধ্য করবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর মহানগর শাখা তাদের এক দফা দাবি আদায়ে জুমার নামাজের পর পৃথক মিছিল বের করবে।
এ ছাড়া অন্য বিরোধী দল যারা যুগপৎ আন্দোলন করে আসছে তারাও নিজ নিজ অবস্থান থেকে অনুরূপ কর্মসূচি পালন করবে বলে জানান তিনি।
শুক্রবার শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিতব্য তাদের কর্মসূচিতে সরকার বাধা দেবে না বলে আশা প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপি-জামায়াত সহিংসতা ছাড়া কিছুই বোঝে না—প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
এদিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা এখনো জনগণকে জিম্মি করে নানাভাবে হয়রানির চেষ্টা করছে”। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা ও গুলি ছাড়া কিছুই বোঝে না।
২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে ও পরের সহিংসতার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। অগ্নিসংযোগসহ তারা মানুষকে জিম্মি করে বিভিন্নভাবে হয়রানি করার চেষ্টা করছে।
বুধবার (৯ অগাস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এক অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, “আমরা জানি আমাদের একটি বিরোধী দল আছে। তারা মানুষ হত্যা, অগ্নিসংযোগ, সহিংসতা, বাস ও ট্রেনে অগ্নিসংযোগ, পুলিশকে আক্রমণ এবং সাধারণ মানুষকে হত্যার মতো অপকর্ম করে”।