অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ইসরো-র ঘোষণা: চন্দ্রযান-৩ চাঁদে নামতে কোনভাবেই ব্যর্থ হবে না


ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ইসরো-র ঘোষণা: চন্দ্রযান-৩ চাঁদে নামতে কোনভাবেই ব্যর্থ হবে না।
ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ইসরো-র ঘোষণা: চন্দ্রযান-৩ চাঁদে নামতে কোনভাবেই ব্যর্থ হবে না।

কোনওভাবেই ব্যর্থ হবে না ভারতের তৃতীয় চন্দ্রযাত্রা। ইসরো-র চন্দ্রযান-৩ চাঁদে নামবেই, এমনটাই ঘোষণা করলেন ইসরো-র চেয়ারম্যান এস সোমনাথ।

ভারতের দ্বিতীয় চন্দ্রযাত্রা সফল হয়নি। চাঁদের বুকে সফট ল্যান্ডিং করার সময় গতিবেগের হেরফেরে মুখ থুবড়ে পড়ে ল্যান্ডার বিক্রম। তবে সেই ভুল আর হবে না বলেই দাবি করেছেন ইসরো-র চেয়ারম্যান। তিনি বলেছেন, ‘প্ল্যান বি’ তৈরি আছে। চাঁদকে পাঁচ বার প্রদক্ষিণ করার পরে চাঁদের দক্ষিণ পিঠে ৭০ ডিগ্রি দ্রাঘিমায় সফট ল্যান্ড করার সময় যদি বিক্রমের কলকব্জায় কোনও গন্ডগোল হয়, যদি ইঞ্জিন বা সেন্সর বিকলও হয়ে যায়, তাহলেও চাঁদের বুকে ল্যান্ডারকে নামানো যাবে। বিকল্প উপায় ভেবেই রেখেছে ইসরো।

ইসরো প্রধানের কথায়, “যদি ল্যান্ডার বিক্রমের সমস্ত সেন্সর বিকল হয়ে যায় বা এর দুটি ইঞ্জিন কাজ করা বন্ধ করে দেয় সেক্ষেত্রেও চন্দ্রযান ৩ চাঁদে ল্যান্ড করতে সক্ষম হবে।” তাঁর কথায়, “চন্দ্রযান ৩-এর ডিজাইন এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে কোনও ব্যর্থতার মুখোমুখি হলে তা ঘুরে দাঁড়াতে পারে।”

চার বছর আগের দ্বিতীয় চন্দ্রযান মিশনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে চন্দ্রযান ৩-তে একাধিক পরিবর্তন করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইসরো-র চেয়ারম্যন এস সোমনাথ জানিয়েছেন, চন্দ্রযান ২-তে কী ত্রুটি হয়েছিল, তা খতিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। সেইসব ভুল শুধরে চন্দ্রযান-৩ নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে চাঁদের মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়ে ইসরোর চন্দ্রযানের বিক্রম।

ঐতিহাসিক সেই চন্দ্রযাত্রা পুরোপুরি সফল হয়নি। অরবিটার পৃথিবীর কক্ষে পৌঁছলেও ল্যান্ডার বিক্রম সফট ল্যান্ডিং করতে পারেনি। ফলে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ইসরো-র স্বপ্নের অভিযান ব্যর্থ হয়েছিল। এবার সেই ভুলগুলো হবে না বলেই দাবি করেছে ইসরো। নতুন ব্লু-প্রিন্টে যা যা পরিবর্তন করা হয়েছে তা সঠিকভাবে কাজ করলে ২৩ অগাস্ট চাঁদের বুকে ইসরো-র চন্দ্রযানের অবতরণ সফল হবে। চাঁদের আঁধার পিঠের রহস্য খুঁজে বের করার লক্ষ্যে আরও একধাপ এগিয়ে যাবে ভারত।

চন্দ্রযান-২ অভিযানের তিনটি অংশ ছিল, অরবিটার (যা কক্ষপথে পাক খায়), ল্যান্ডার (যা মাটিতে অবতরণ করে এবং এক জায়গায় থিতু হয়) এবং রোভার (যন্ত্রচালিত গাড়ি)। সূত্রের খবর, চন্দ্রযান-৩ অভিযানে অরবিটার থাকছে না। শুধু ল্যান্ডার এবং রোভার থাকবে। এবারের ল্যান্ডার বিক্রম গতবারের চেয়ে অনেক বেশি শক্তপোক্ত।

বিক্রমের পা অনেক বেশি মজবুত করা হয়েছে যাতে ল্যান্ডিংয়ের সময় যে ধাক্কা লাগবে তার বেগ সহজেই সইতে পারে। ল্যান্ডিংয়ের বেগ প্রতি সেকেন্ডে দু’মিটার থেকে বাড়িয়ে তিন মিটার করা হয়েছে। অর্থাৎ বেশি বেগে অবতরণের সময়ও ল্যান্ডারের ‘পা’ ভাঙবে না।

এবারের প্রযুক্তিতে বিকল্প উপায়ও রাখা হয়েছে। ইসরো-র বিজ্ঞানীরা বলছেন, ল্যান্ডিংয়ের সময় বেগ সেকেন্ডে ২ মিটার হল সঠিক। এর চেয়ে বেশি সেকেন্ডে ৩ মিটার বেগ হলেও বিক্রম সেই ধাক্কা নিতে পারবে। গতবারের মতো গতিবেগ বেড়ে গেলে মুখ থুবড়ে পড়বে না।
রোভার-ও অনেক উন্নত। এতে থাকছে আলফা পার্টিকল এক্স-রে স্পেকট্রোমিটার (APXS) এবং লেজার ইনডিউসড ব্রেকডাউন স্পেকট্রোস্কোপ (LIBS)।

এবার চাঁদে সফট ল্যান্ডিং করার জন্য যে জায়গা বেছে নেওয়া হয়েছে, সেটার পরিধি আগেরবারের থেকে বেশি রাখা হয়েছে। গতবার চাঁদে অবতরণের জন্য ল্যান্ডার ‘বিক্রম’-র কাছে মাত্র ৫০০ মিটারX৫০০ মিটার জায়গা ছিল। এবার সেটা বাড়িয়ে ৪ কিলোমিটারX২.৪ কিলোমিটার করা হয়েছে।

XS
SM
MD
LG