অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতের সংসদে 'ইন্ডিয়া' জোটের অনাস্থা বিতর্ক ৮ অগাস্ট, ১০ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রীর জবাবি ভাষণ


ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী

ভারতের সংসদে চলছে বর্ষাকালীন অধিবেশন। আর সেখানেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে বিজেপি-বিরোধী 'ইন্ডিয়া' জোটের ২৬টি দলের আনা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক শুরু হবে ৮ অগাস্ট। তিন দিনের মাথায় ১০ অগাস্ট বিতর্কের জবাবি ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

মঙ্গলবার ১ অগাস্ট লোকসভার কার্যসূচি নির্ধারণ কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে অবশ্য বিরোধী দলগুলি উপস্থিত ছিল না। তাঁরা বৈঠক বয়কট করে। তাঁদের বক্তব্য লোকসভার স্পিকারের কর্তব্য নোটিশ জমা করার দশ দিনের মধ্যে অনাস্থা প্রস্তাবের উপর বিতর্কের ব্যবস্থা করা। ২৬ জুলাই কংগ্রেসের লোকসভার উপনেতা গৌরব গগৈ লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার হাতে অনাস্থা প্রস্তাব জমা করেছিলেন। সেই মতো ৬ অগাস্টের মধ্যে অনাস্থা বিতর্ক শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু স্পিকার আরও দুদিন পিছিয়ে অনাস্থা বিতর্কের তারিখ নির্ধারণ করেছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনও স্পষ্ট নয় যে ৮ তারিখের বিতর্কে শেষ পর্যন্ত বিরোধীরা অংশ নেবেন নাকি তারা অন্য কোনও কৌশলে সরকারকে চাপে রাখার চেষ্টা চালাবেন। যদিও সরকার পক্ষের বক্তব্য, নোটিস জমা হওয়ার ১০ দিনের মধ্যে বিতর্ক শুরু করতে হবে এমন কোনও নিয়ম নেই।

বস্তুত, অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে কোনও সমস্যা নেই সরকারের কারণ ভোটাভুটি হলে সরকারের পক্ষে ৩৩০টি ভোট পড়বে সে বিষয়ে নিশ্চিত সরকার পক্ষ। এরমধ্যে বিজেপির একাই আছে ৩০৩ সাংসদের সমর্থন। অন্যদিকে ২৬টি বিরোধী দলের তরফে ভোট পড়তে পারে ১৪৪টি।

বাকি সাংসদেরা ভোটে অংশ নিতে পারেন অথবা ভোটাভুটিতে অংশ নিয়ে অ্যাবস্টেন করতে পারেন। এছাড়া সেদিন অধিবেশন বয়কটও করতে পারেন।

রাজনৈতিক মহলের সূত্রে প্রকাশ, বিজেপি জয় নিয়ে নিশ্চিত হলেও নৈতিক জয় সম্পর্কে পুরোপুরি স্বস্তিতে নেই। যে ৩৮টি দলকে নিয়ে মোদী-শাহ-নাড্ডা এনডিএ-কে নতুন করে গঠন করেছেন সেই শরিকেরা অনাস্থা বিতর্কে কে কী ভূমিকা নেবেন সেটা এখনও শাসকদলের কাছে স্পষ্ট নয়। এছাড়া ওড়িশার বিজু জনতা দল এবং অন্ধ্র প্রদেশের ওয়াইএসআর কংগ্রেস এবং তেলুগু দেশম পার্টি যারা এনডিএ এবং ইন্ডিয়া কোনও জোটেই নেই অনাস্থা বিতর্কে তাঁদের অবস্থানও মোদী সরকারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

কারণ এই অনাস্থা প্রস্তাবে তাঁরা যদি সরকারের তীব্র বিরোধিতা করে তাহলে ভবিষ্যতে বিজেপির সমস্যা হতে পারে। যদি ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি শিবির কাঙ্ক্ষিত সংখ্যা না পায় তাহলে বিজেপি এই সব আঞ্চলিক দলগুলির সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করবে।

এই দলগুলি এতদিন নানা বিতর্কে সংসদের ভিতরে-বাইরে সরকারের পাশেই থেকেছে। কিন্তু মণিপুর ইস্যু এবং অভিন্ন দেওয়ানি বিধির মতো বিষয়গুলি নিয়ে তাঁদের ঘোরতর আপত্তি আছে। এই তিনটি দল মনে করে মণিপুরে বিজেপি সরকার চূড়ান্ত ব্যর্থ। এই পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি নেতারা এখন এই দলগুলির সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালাচ্ছেন যাতে তাঁরা অনাস্থা বিতর্কে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব না নেয়। সেইজন্যই অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়ার বারো দিন পর বিতর্কের দিন স্থির করা হয়েছে।

XS
SM
MD
LG