মঙ্গলবার ১৮ জুলাই ভারতের কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে বিজেপি বিরোধী দলগুলির বৈঠকে আত্মপ্রকাশ করেছে নতুন জোট ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স বা ইন্ডিয়া। এই একই দিনে সেই জোটকে তীব্র আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর কথায়, স্রেফ বিরোধিতার জন্য নেতিবাচক উদ্দেশ্য নিয়ে ওই জোট গঠিত হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ - তাৎপর্যপূর্ণ হল, বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ আত্মপ্রকাশের দিনে মোদীর ভাষণ জুড়ে ছিল ‘ভারত’। প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিলেন, ২০২৪-এর লড়াই হতে চলেছে ‘ইন্ডিয়া বনাম ভারত’। বিজেপি নেতারাও বিরোধী জোট নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলতে শুরু করেছেন, "এনডিএ হিন্দিতে হল রাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক গঠবন্ধন। ইন্ডিয়ার হিন্দি কী?"
মঙ্গলবার রাজধানী দিল্লিতে বসে এনডিএ-র বৈঠক। সেখানে ৩৮টি দল যোগ দেয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, - এনডিএ সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। তিনিই ফের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন স্পষ্ট করে দিয়ে মোদী দাবি করেন, "দেশবাসী মন তৈরি করে নিয়েছে, তৃতীয়বারের জন্য এনডিএ সরকারকে ক্ষমতায় আনবে তারা।" প্রধানমন্ত্রী আরও দাবি করেন, বিদেশিরাও অপেক্ষায় আছে ভারতে তৃতীয় এনডিএ সরকার গঠনের অপেক্ষায়। কারণ, বিদেশিরা বিনিয়োগ করার আগে দেখে নিতে চায় কারা ক্ষমতায় আসছে।
মঙ্গলবারই এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বিরোধী জোটকে নিশানা করতে গিয়ে বাংলা ও কেরলের প্রসঙ্গ টেনে কংগ্রেস, সিপিএম এবং তৃণমূলকে সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, "কেরলে সিপিএম ও কংগ্রেস মারামারি করছে। বাংলায় তৃণমূলের হাতে মার খাচ্ছে কংগ্রেস ও সিপিএম। অথচ, ওদের নেতাদের মুখ খোলার সাহস নেই। সুবিধাবাদী রাজনীতি করতে বেঙ্গালুরুতে তারা জড়ো হয়েছে।" এরপর, এনডিএ-র বৈঠকেও প্রধানমন্ত্রী বাংলা ও কেরলের প্রসঙ্গ তুলে এই তিন দলকে খোঁচা দেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর বৈঠকে ঘুরে ফিরে এনডি-র কথা শোনা গিয়েছে। এই জোট গঠনে প্রয়াত অটল বিহারী বাজপেয়ী এবং লালকৃষ্ণ আদবানির ভূমিকা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। দীর্ঘ ভাষণে এনডিএ শরিক নেতাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "হয়তো ব্যস্ততার কারণে এনডিএ-র জন্য গত নয় বছরে যথেষ্ট সময় দিতে পারিনি। হয়তো আমার নিরাপত্তার কারণে আপনারা আমার কাছে আসার সুযোগ হারিয়েছেন। কিন্তু মনে রাখবেন, এটা সচেতনভাবে নয়। এজন্য আমাকে ভুল বুঝবেন না।"
দীর্ঘ ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নানা ক্ষেত্রে তাঁর সরকারের নয় বছরের সাফল্য তুলে ধরেন। বলেন, "২০১৪-তে আমি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সময় ভারত ছিল বিশ্বের দশম অর্থনীতি। আজ নয় বছর পর ভারত পঞ্চম অর্থনীতি। আমি কথা দিচ্ছি, তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসে দেশকে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হিসাবে গড়ে তুলব।"