ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচার সেরে ফেরার পথে কয়েক সপ্তাহ আগে কোমরে ও বাঁ হাঁটুতে চোট পেয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কয়েক দিন আগে অস্ত্রোপচারও হয়েছিল তাঁর। এমন অবস্থায়, বিরোধী শিবিরের বৈঠকে যোগ দিতে কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে গিয়েছেন তিনি। যদিও চিকিৎসকেরা তাঁকে পরামর্শ দিয়েছিলেন যেন তিনি ভিড় এড়িয়ে চলেন, নৈশভোজে না যান। কিন্তু সোমবার বিরোধী শিবিরের নৈশভোজে বিশেষজ্ঞদের মতে, দেখা গেল এক ‘শক্তিশালী’ ছবি। মমতা বন্দোপাধ্যায় যোগ দিলেন নৈশভোজে। শুধু তাই নয়, কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধীর ঠিক পাশের চেয়ারটিই ছিল তৃণমূল সুপ্রিমোর জন্য বরাদ্দ।
আগামী ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে বিরোধীদের একজোট করার চেষ্টা যাঁরা শুরু করেছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম নাম ছিল মমতা বন্দোপাধ্যায়ের। বিজেপি বিরোধী দলের নেতানেত্রীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে দেখা গেছে তৃণমূল সুপ্রিমোকে। এই ‘মহাজোট’-এ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করে রাজনৈতিক মহল।
২৩ জুন পাটনায় বিরোধীদের প্রথম বৈঠকেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন। তবে সেই বৈঠকে ছিলেন না সনিয়া। এসেছিলেন রাহুল গান্ধী। ওই বৈঠকের যত ছবি সামনে এসেছে, প্রায় সব ছবিতেই দেখা গেছে রাহুলের সঙ্গে কিছুটা দূরত্বই রেখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেঙ্গালুরুর বৈঠকে প্রথম দিনেই সেই দূরত্ব উধাও। সনিয়া-মমতা ছিলেন পাশাপাশি।
শুরু থেকেই সনিয়ার সঙ্গে মমতার সম্পর্ক খুবই ভাল। রাজনৈতিক মত পার্থক্য থাকলেও কেউ কাউকে কখনও ব্যক্তিগত আক্রমণ করেননি। ২০১১ সালে যখন ভোটে জিতে বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার গঠন করলেন, তখনও কংগ্রেস ছিল তাঁর সঙ্গেই। যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ছবি পাল্টেছে। বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে এখন আর ‘সুসম্পর্ক’ নেই তৃণমূলের। তবে তার পরেও সনিয়ার সঙ্গে মমতার সখ্যতা এখনও অটুট।
সম্প্রতি পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গে তুমুল অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। সেই ঘটনায় দেখা গেছে, বাম-কংগ্রেস এক জোটে শাসক দল তৃণমূলকে আক্রমণ করছে। পাল্টা তৃণমূলও ছেড়ে কথা বলেনি। কিন্তু বৃহত্তর রাজনৈতিক স্বার্থে বিজেপি বিরোধী বৈঠকে কংগ্রেস-তৃণমূল-সিপিএম পাশাপাশি।
মঙ্গলবার ১৮ জুলাই বিরোধীদের মূল বৈঠক রয়েছে। পাটনার থেকেও এই বৈঠক আরও বড় হতে চলেছে। এখানে ২৬টি বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দল যোগ দিয়েছে। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি, সনিয়া-মমতা পাশাপাশি আসা জোরালো বার্তা দেবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।