অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

পৃথিবীর মাটি থেকে ১১৪ কিলোমিটার উপরে পেলোড আলাদা হয়েছে ভারতের চন্দ্রযান ৩-এর, চাঁদে ল্যান্ডিং ৪০ দিন পর


পৃথিবীর মাটি থেকে ১১৪ কিলোমিটার উপরে পেলোড আলাদা হয়েছে ভারতের চন্দ্রযান ৩-এর
পৃথিবীর মাটি থেকে ১১৪ কিলোমিটার উপরে পেলোড আলাদা হয়েছে ভারতের চন্দ্রযান ৩-এর

ভারতের জাতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো থেকে সফল উৎক্ষেপণ হয়েছে চন্দ্রযান ৩-এর। এখন পৃথিবীর মাটি ছাড়িয়ে চাঁদের দিকে যাচ্ছে চন্দ্রযান-৩। পৃথিবীর মাটি থেকে ১১৪.৮ কিলোমিটার উপরে আলাদা হয়েছে। এবার ধীরে ধীরে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের মায়া কাটিয়ে চাঁদের কক্ষপথের দিকে উড়ে যাবে চন্দ্রযান-৩।

একটার পর একটা ধাপ পেরিয়ে যাচ্ছে চন্দ্রযান-৩। ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন একদম সঠিকভাবে কাজ করছে বলে জানিয়েছে ইসরো। এবারের চন্দ্রযাত্রায় বিরাট আকৃতির 'বাহুবলী' রকেট বেছে নিয়েছিল ইসরো। এলভিএম৩ রকেটের তিনটি স্টেজ আছে। আকাশে ওড়ার জন্য আছে কঠিন ও তরল জ্বালানি। উৎক্ষেপণের ১০৮ সেকেন্ডের মধ্যে জ্বলতে শুরু করেছে তরল জ্বালানি।

ইসরো জানিয়েছে, বেলা ২টো ৩৫ মিনিটে রকেট উৎক্ষেপণের পরে সেকেন্ড লিকুইড স্টেজে তরল জ্বালানি জ্বলতে শুরু করে। উৎক্ষেপণের ১০৮ সেকেন্ড পর থেকে এল১১০ ইঞ্জিনের তরল জ্বালানি জ্বলতে শুরু করে। ৩০৭.৯৬ সেকেন্ড পরে ক্রায়োজেনিক স্টেজে ইঞ্জিন সক্রিয় হয়। তিন নম্বর স্টেজে সি২৫ ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিনে তরল অক্সিজেন ও তরল হাইড্রোজেন আছে। এই ক্রায়োজেনিক স্টেজ রকেটকে সবচেয়ে বেশি সেকেন্ডে ১০.২৪২ কিলোমিটার থ্রাস্ট দেবে।

তৃতীয় চন্দ্রযান মিশনের ল্যান্ডারে বাড়তি জ্বালানি থাকছে। ইসরো-র বিজ্ঞানীরা বলছেন, যদি গতিবেগে কোনও গোলমাল হয় বা চাঁদের পিঠে নামতে দেরি হয়, তাহলেও যাতে পর্যাপ্ত জ্বালানি থাকে সেই জন্য অতিরিক্ত জ্বালানি ভরে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে বিকল্প কোনও জায়গাতেও নামতে পারে ল্যান্ডার বিক্রম। সেই সঙ্গেই থাকছে নতুন সেন্সর যার নাম লেসার ডপলার ভেলোসিটি মিটার। তিনটি ভেলোসিটি ভেক্টরও থাকছে ল্যান্ডারে। থাকছে উন্নত মানের ক্যামেরা ল্যান্ডার হরাইজন্টাল ভেলোসিটি ক্যামেরা এবং ল্যান্ডার পজিশন ডিটেকশন ক্যামেরা।

দ্বিতীয় চন্দ্রযানে পাঁচটি ইঞ্জিন ছিল। তৃতীয় চন্দ্রযানে ইঞ্জিনের সংখ্যা কমিয়ে চার করা হয়েছে। এবার ল্যান্ডারের ওজন প্রায় ২০০ কিলোগ্রাম বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে ল্যান্ডিংয়ের সময় ন্যূনতম দুটি ইঞ্জিন চালু রাখতে হবে। দ্বিতীয় চন্দ্রযানে যে সেন্ট্রাল ইঞ্জিন ছিল সেটা এবার বাদ দেওয়া হয়েছে। ল্যান্ডিংয়ের সময় গতিবেগে কোনও সমস্যা হলে বা সেন্সর কাজ না করলে যাতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়, সেজন্য সফটওয়্যার আরও উন্নত করা হয়েছে।

৪০ দিনের যাত্রা শেষে আগামী ২৩ অগস্ট বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে চাঁদের দক্ষিণ পিঠে সফট ল্যান্ডিং করবে চন্দ্রযান-৩।

চন্দ্রযানের সি২৫ ইঞ্জিন আপাতত কাজ করছে। ১৯১ কিলোমিটার উচ্চতায় চলে এসেছে চন্দ্রযান-৩। ৯৫০ সেকেন্ড পরে ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন বন্ধ করে দেওয়া হবে। ১৭০ কিলোমিটার উচ্চতায় ইলেকট্রিকাল পার্কিং লটে লঞ্চ করার পর থেকে ধীরে ধীরে পৃথিবী থেকে চাঁদের দিকে এগোবে চন্দ্রযান-৩, একে ইউনিট ট্রান্সফার অরবিট বলা হয়। ৫ অগস্টে চাঁদের কক্ষপথে ঢুকে যাবে চন্দ্রযান-৩। ২৩ অগস্ট থেকে চাঁদের মাটিতে নামানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে।

XS
SM
MD
LG