ভারতে আগামীকাল ১৪ জুলাই হতে চলেছে এক ঐতিহাসিক দিন। পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চাঁদে পাড়ি দেবে ভারতের জাতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো-র চন্দ্রযান ৩। সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত হয়ে গেছে। এখন কাউন্টডাউন চলছে। চন্দ্রযানকে চাঁদে নিয়ে যাবে যে বিশালাকৃতি রকেট সেই ‘বাহুবলী’ জিএসএলভি মার্ক-৩ প্রস্তুতি শেষে শ্রীহরিকোটার সতীশ ধবন মহাকাশ কেন্দ্রের লঞ্চিং স্টেশনে অপেক্ষা করছে। সবুজ সঙ্কেত পেলেই চন্দ্রযানকে নিয়ে তা পাড়ি দেবে চাঁদে।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘ইসরো’র তৈরি ‘জিও-সিনক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল’ (জিএসএলভি)-মার্ক-৩ চাঁদের মাটিতে যাতে সফল ভাবে সফ্ট ল্যান্ডিং করতে পারে, তার জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে ইসরো সূত্রের খবর। ২০১৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ল্যান্ডার ‘বিক্রম’-কে চাঁদের পিঠে নামাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছিল ইসরোর চন্দ্রযান-২ মহাকাশযান। সেই অভিযানে পাঠানো অরবিটরটি এখনও চাঁদকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে। তাই এ বারের অভিযানে ইসরো আর কোনও অরবিটার পাঠাবে না চাঁদের কক্ষপথে। চাঁদের মাটিতে নামতে কক্ষপথে থাকা চন্দ্রযান-২ এর অরবিটারেরই সাহায্য নেবে এ বার চন্দ্রযান-৩ এর সঙ্গে যাওয়া ল্যান্ডার আর তার ভিতরে থাকা রোভার।
চন্দ্রযান ৩-এর প্রযুক্তিতে কী কী বদল আনা হয়েছে সেই ব্যাপারে এখনও সবটা জানাননি ইসরো-র গবেষকরা। শোনা গেছে, তৃতীয় চন্দ্রযাত্রার উদ্দেশ্যও হতে পারে চাঁদের আঁধার পিঠ অর্থাৎ দক্ষিণ মেরুর রহস্যের খোঁজ। এই দক্ষিণ মেরুরই কোথাও হারিয়ে গেছে চন্দ্রযান ২-এর ল্যান্ডার বিক্রম। চন্দ্রযান ৩ চাঁদের সেই রহস্যময় পিঠেরই গোপন কথা সামনে আনবে। এবারের চন্দ্রযানে মোট ১৩টি ‘থ্রাস্টার’ রয়েছে, যা সফট ল্যান্ডিং করতে সাহায্য করবে।
জ্বালানি সহ মহাকাশযানটির ওজন প্রায় আড়াই হাজার কেজি। জ্বালানিশূন্য অবস্থায় সেটির ওজন ৫০০ কিলোগ্রামে নেমে আসবে। তাতে থাকবে বিশেষ ক্যামেরা এবং অন্যান্য প্রযুক্তি। অবতরণস্থল থেকে যদি ল্যান্ডার সরেও যায় তাহলেও যাতে তার সঙ্গে যোগাযোগ বজায় থাকে সেই প্রযুক্তিও দেওয়া হয়েছে।