অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতের মধ্যপ্রদেশে কুনো জাতীয় উদ্যানে থামছে না চিতা মৃত্যু, এবার ট্রমাটিক শকে মৃত চিতা তেজস


ভারতের মধ্যপ্রদেশে কুনো জাতীয় উদ্যানে থামছে না চিতা মৃত্যু, এবার ট্রমাটিক শকে মৃত চিতা তেজস
ভারতের মধ্যপ্রদেশে কুনো জাতীয় উদ্যানে থামছে না চিতা মৃত্যু, এবার ট্রমাটিক শকে মৃত চিতা তেজস

ভারতের মধ্যপ্রদেশে চিতা মৃত্যুর ঘটনা যেন বন্ধই হচ্ছে না। আবারও আরেকটি চিতার মৃত্যু হল কুনো জাতীয় উদ্যানে।

গত এক মাসের বেশি সময় ধরে মধ্যপ্রদেশের কুনোয় একের পর এক চিতার মৃত্যু হচ্ছে। গত দেড় মাসের মধ্যে এই নিয়ে সেখানে সাতটি চিতার মৃত্যু হল। মৃতের মধ্যে চিতার শাবকও ছিল। এপ্রিল মাসেই হার্ট অ্যাটাকে মারা গিয়েছিল পুরুষ চিতা উদয়। বন দফতরের পশু চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন কার্ডিয়ো পালমোনারি ফেলিওর হয়েছিল চিতা উদয়ের। এবার আরও একটি পুরুষ চিতার মৃত্যু হল। তেজসের মৃত্যুর কারণও মর্মান্তিক বলেই জানিয়েছেন পশু চিকিৎসকরা।

একটি স্ত্রী চিতার সঙ্গে জায়গা দখল নিয়ে কিছুদিন ধরেই দফায় দফায় ঝামেলা হচ্ছিল তেজসের। রীতিমতো মারামারি শুরু হয়ে যায়। দুই চিতাই পরস্পরকে আঁচড়ে কামড়ে রক্তাক্ত করে। আহত তেজসকে উদ্ধার করে চার দিন ধরে টানা চিকিৎসা করা হয়। চিকিৎসকরা বলছেন. জখম সেরেও যাচ্ছিল তেজসের কিন্তু ওই মারামারির পরে প্রচণ্ড ট্রমায় ছিল সে। এতটাই ভয় পেয়ে গিয়েছিল তেজস, যে তার শারীরিক অবস্থার ফের অবনতি হতে শুরু করে।

মাত্র ৪৩ কিলোগ্রাম ওজনের তেজস আগে থেকেই দুর্বল ছিল। স্ত্রী চিতাটির আক্রমণের পরে তার শরীরের অনেক অঙ্গই ক্ষতিগ্রস্থ হয় বলে জানিয়েছেন কুনোর পশু চিকিৎসকরা। তাঁরা বলেছেন, ফুসফুস ও কিডনি ঠিকমতো কাজ করছিল না তেজসের। পোস্ট ট্রমাটিক শকের কারণেই এইসব শারীরিক সমস্যা শুরু হয়েছিল বলেই ধারণা চিকিৎসকদের।

ভারতের মধ্যপ্রদেশে কুনো জাতীয় উদ্যানে চিতা বাঘ
ভারতের মধ্যপ্রদেশে কুনো জাতীয় উদ্যানে চিতা বাঘ

চিতার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য জবলপুর স্কুল ওয়াইল্ড লাইফ ফরেন্সিক অ্যান্ড হেলথে পাঠানো হয়েছে। বন দফতর জানাচ্ছে, নামিবিয়া থেকে আনা চিতা ও কুনোতে পরবর্তী সময়ে জন্ম নেওয়া চিতা শাবক মিলিয়ে মোট ২৪টি আফ্রিকান চিতা ছিল জাতীয় উদ্যানে। এখন সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১৭টিতে।

চিতা উদয়ও মারাত্মক সংক্রমণজনিত রোগে মারা গিয়েছিল। পশু চিকিৎসকরা বলছেন, চিতা উদয় দুরারোগ্য বটুলিজম অসুখে ভুগছিল। এটি একধরনের স্নায়ুর রোগ যা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে হয়। শরীরে টক্সিন ঢোকে এবং তার থেকেই ধীরে ধীরে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র বিকল হতে শুরু করে। রোগটির লক্ষণ দুর্বলতা, ঝাপসা দৃষ্টি, ক্লান্তি এবং গলার স্বরে জড়তা দিয়ে শুরু হওয়া। এরপরে হাত, বুকের পেশী এবং পা দুর্বল হয়ে যেতে পারে। বমি বমি ভাব, পেট ফুলে যাওয়া এবং ডায়রিয়াও হতে পারে। চিতা উদয়ের মধ্যেও একই উপসর্গ দেখা গিয়েছিল। হাঁটাচলা করতে কষ্ট হচ্ছিল তার। প্রায় পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল। ঝাপসা হয়েছিল দৃষ্টি। খেতেও পারছিল না উদয়। তাকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল অন্য এনক্লোজারে। সেখানেই মৃত্যু হয় তার।

XS
SM
MD
LG