ভারতীয় কুস্তি সংস্থার প্রধান ব্রিজভূষণ শরণ সিং-এর বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছে দিল্লি পুলিশ। সেই চার্জশিটে পুলিশ উল্লেখ করেছে, ব্রিজভূষণ যৌন অপরাধে দায়ী। পুলিশের দাবি, এখনও পর্যন্ত তদন্তে দেখা গেছে ব্রিজভূষণ যৌন হয়রানি, শ্লীলতাহানির চেষ্টা, উত্যক্ত করা, অশালীন মন্তব্য ইত্যাদি অপরাধ করেছেন। এর জন্য তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে শাস্তি দেওয়া দরকার।
দিল্লি পুলিশের একটি দল রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে গিয়ে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে। চার্জশিটে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ (জোর করে মহিলার শ্লীলতাহানির চেষ্টা), ৫০৬ (ভীতি প্রদর্শন) ৩৫৪এ (অশালীন মন্তব্য), ৩৫৪ডি (উত্যক্ত করা) ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এই ধারাগুলির মধ্যে ৩৫৪ জামিন অযোগ্য। তবে বাকি দু’টি ধারা জামিনযোগ্য। চার্জশিটে প্রায় ১৫০ জনের সাক্ষ্য রেকর্ড করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছেন ছ’জন কুস্তিগির, যাঁরা ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকেই ভারতের কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগে সরব হয়েছেন কুস্তিগিররা। সাক্ষী মালিক, বজরং পুনিয়া, ভিনেশ ফোগাটরা দিল্লির যন্তরমন্তরে আন্দোলন শুরু করেন। দিনে দিনে সেই আন্দোলনের তেজ বাড়তে থাকে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দিল্লি পুলিশ ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে।
সেই এফআইআরের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়। প্রাথমিক তদন্তের পর আদালতে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে পুলিশ চার্জশিটও জমা দেয়। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে মূল দু’টি মামলা দায়ের হয়েছিল। তার মধ্যে একটি ছিল পকসো ধারায় মামলা। সেখানে অভিযোগ করা হয়েছিল যে এক নাবালিকা কুস্তিগিরকে যৌন হেনস্থা করেছেন ব্রিজভূষণ। কিন্তু পরে ওই নাবালিকা বয়ান বদলে জানায় যে কোনও যৌন হেনস্থা করা হয়নি। সেই অভিযোগের পক্ষে কোনও প্রমাণ দিল্লি পুলিশ পায়নি।
সূত্রের খবর, দু’জন মহিলা, যাঁরা ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে অশালীন ভাবে স্পর্শের অভিযোগ তুলেছিলেন, তাঁদের থেকে প্রামাণ্য ছবি, অডিও বা ভিডিও চেয়েছিল দিল্লি পুলিশ। ব্রিজভূষণের অশালীন ভাবে জড়িয়ে ধরার ছবিও প্রমাণ হিসেবে চাওয়া হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, টুর্নামেন্টে ওয়ার্ম-আপের সময়ে কুস্তি ফেডারেশনের অফিসে বিভিন্ন ভাবে তাঁদের হেনস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন কুস্তিগিররা।
কুস্তিগিরদের হেনস্থা মামলায় ইতিমধ্যেই ২০০ জনের বয়ান রেকর্ড করেছে দিল্লি পুলিশ। সেই তালিকায় রয়েছেন, অভিযোগকারী থেকে শুরু করে কোচ, রেফারি, কুস্তি ফেডারেশনের কর্তা প্রমুখরা। জানা গেছে, পুলিশের কাছে হেনস্থা অডিও এবং ভিডিও প্রমাণ জমা দিয়েছেন অভিযোগকারী চার কুস্তিগির।