অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতের অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের কাজ হঠাৎ ত্বরান্বীত: লোকসভা ভোট এগোনোর জল্পনা রাজনৈতিক মহলে


ভারতের অযোধ্যায় নির্মাণাধীন হিন্দু রাম মন্দির নির্মাণের কাজে এতদিন যুক্ত ছিলেন ৫৫০ কর্মী। হঠাৎ করেই কর্মী সংখ্যা বৃদ্ধি করে ১৬০০ করা হয়েছে। এছাড়া এতদিন সকাল ছ'টা থেকে সন্ধ্যা ছ'টা পর্যন্ত কাজ হত। দিন কয়েক হল দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা কাজ চলছে। ৯ জুলাই, ২০২৩।
ভারতের অযোধ্যায় নির্মাণাধীন হিন্দু রাম মন্দির নির্মাণের কাজে এতদিন যুক্ত ছিলেন ৫৫০ কর্মী। হঠাৎ করেই কর্মী সংখ্যা বৃদ্ধি করে ১৬০০ করা হয়েছে। এছাড়া এতদিন সকাল ছ'টা থেকে সন্ধ্যা ছ'টা পর্যন্ত কাজ হত। দিন কয়েক হল দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা কাজ চলছে। ৯ জুলাই, ২০২৩।

ভারতে আগামী লোকসভা নির্বাচন হিসাব মতো হওয়ার কথা আগামী বছরের এপ্রিল-মে মাসে। কিন্তু দক্ষিণ ভারতে কর্নাটক বিধানসভার নির্বাচনে বিজেপির হারের পর থেকেই রাজনৈতিক মহলের জল্পনা শুরু হয় নভেম্বরে রাজ্যস্থান, ছত্তীসগড়, মধ্যপ্রদেশ, তেলেঙ্গানার বিধানসভা নির্বাচনের সঙ্গেই লোকসভার ভোট করে নেওয়া হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিভিন্ন পদক্ষেপেও সেই জল্পনা আরও জোরদার হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী এক সঙ্গে একাধিক প্রকল্পের শিলান্যাস-উদ্বোধন করছেন। গত চারদিনে তিনি এমন পাঁচশো প্রকল্পের ফিতে কেটেছেন। অন্যদিকে, নির্বাচন কমিশন রাজ্য নির্বাচন আধিকারিকদের কাছে ইভিএম নিয়ে তত্ত্বতালাশ শুরু করেছে, যা তারা সাধারণত ভোটের চার-পাঁচ মাস আগে করে থাকে।

পশ্চিমবঙ্গের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিহারের নীতীশ কুমারের মতো বিরোধী নেতা-নেত্রী, মুখ্যমন্ত্রীরাও মনে করেন, বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে পিছিয়ে পড়লে নরেন্দ্র মোদী লোকসভার ভোট এগিয়ে আনতে পারেন। নীতীশ রাজ্য প্রশাসনকে প্রয়োজনে বাড়তি লোক নিয়োগ করে প্রকল্পের বকেয়া কাজ অক্টোবরের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

ভোট এগোনোর জল্পনায় এবার নয়া মাত্রা দিল অযোধ্যায় নির্মীয়মাণ রাম মন্দির। সেখানে বকেয়া কাজ শেষ করা নিয়ে কর্তৃপক্ষের তৎপরতায় লোকসভা ভোট এগোনোর জল্পনা আরও জোরদার হয়েছে। পূর্ব ঘোষণা মতো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আগামী জানুয়ারি মাসের গোড়ায় মন্দির উদ্বোধন করার কথা। ২০২০-র ৫ অগাস্ট তিনি মন্দিরের শিলান্যাস করেন।

মন্দির নির্মাণ ট্রাস্টের তরফে মাস দুই আগেও জানানো হয়, নির্ধারিত সূচি মেনেই মন্দির নির্মাণের কাজ চলছে। ডিসেম্বর মাস শেষ হওয়ার আগেই বকেয়া কাজ শেষ করে প্রধানমন্ত্রীর দফতরকে জানিয়ে দেওয়া হবে। মাঝে বর্ষায় কাজের সমস্যা হবে না, জানানো হয় তখন।

কিন্তু দিন কয়েক হল মন্দির নির্মাণে ‘ডু ইট নাউ’ নীতি নিয়েছেন মন্দির নির্মাণ ট্রাস্ট। অর্থাৎ জমে থাকা কাজ এখনই শেষ করতে হবে। মন্দির নির্মাণের কাজে এতদিন যুক্ত ছিলেন ৫৫০ কর্মী। হঠাৎ করেই কর্মী সংখ্যা বৃদ্ধি করে ১৬০০ করা হয়েছে। এছাড়া এতদিন সকাল ছ'টা থেকে সন্ধ্যা ছ'টা পর্যন্ত কাজ হত। দিন কয়েক হল দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা কাজ চলছে।

যা থেকে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা, দীপাবলীর আগেই প্রধানমন্ত্রী মন্দিরের শিলান্যাস করে দিয়ে ভোট এগিয়ে আনার কথা ঘোষণা করতে পারেন। কোনও কারণে যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলেও ভোট এগোনোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তাদের বক্তব্য, স্বঘোষিত রামভক্ত মোদী সেক্ষেত্রে রাম মন্দিরের উদ্বোধনের সুযোগ চেয়ে ফের তাঁকে প্রধানমন্ত্রী করার আর্জি জানাতে পারেন। কারণ, শিলান্যাসের মতো উদ্বোধনও প্রধানমন্ত্রী করবেন বলে ট্রাস্টি বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়ে আছে।

উদ্বোধনের দিন প্রধানমন্ত্রী আসলে মন্দিরের গর্ভগৃহ অর্থাৎ শ্রীরামচন্দ্রের জন্মস্থান হিসাবে চিহ্নিত অংশে রামলালার মূর্তিটি প্রতিষ্ঠা করবেন যেটি এখন পাশেই অস্থায়ী মন্দিরে রাখা আছে কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে। মূর্তি স্থাপন অর্থাৎ প্রাণ প্রতিষ্ঠার পরদিন থেকে সাধারণ পূণ্যার্থীরা মন্দির চত্ত্বরে প্রবেশাধিকার পাবেন। তবে মূল মন্দিরে ঢুকে পুজো দেওয়ার সুযোগ পেতে কিছুদিন অপেক্ষা করতে হতে পারে।

শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থ ক্ষেত্র ট্রাস্ট্র-এর প্রজেক্ট ম্যানেজার জগদীশ আফালে জানিয়েছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন তাঁরা। তাঁর বক্তব্য, বর্ষার জন্য কাজে বিঘ্ন ঘটছে বলেই গোটা দিনকে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৃষ্টি থামলেই যাতে কাজ শুরু করা যায় সে জন্য কর্মী সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। যদিও রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা লোকসভা ভোট এগিয়ে আনা হতে পারে।

XS
SM
MD
LG