উত্তর-পূর্ব ভারতের জনজাতি দাঙ্গা-বিধ্বস্ত মণিপুর নিয়ে মামলায় সোমবার ১০ জুলাই দেশের শীর্ষ আদালত, সুপ্রিম কোর্ট সাফ জানিয়েছে - হিংসা থামানোর দায় রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের। এই ব্যাপারে আদালত কোনওভাবেই হস্তক্ষেপ করবে না। হিংসা থামাতে মামলাকারীরা কোনও পরামর্শ দিতে চাইলে তা আদালতে পেশ করতে পারে। আদালত সেগুলি সরকারকে বিবেচনা করে দেখতে বলতে পারে।
প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি পিএস নরসিমহার বেঞ্চ সোমবার সংশ্লিষ্ট মামলায় আরও বলে, "আমরা চাই না আদালতের শুনানিকে হিংসা আরও বাড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশে ব্যবহার করা হোক।" বেঞ্চের বক্তব্য, "আমরা বলতে পারি না সরকারের কী করণীয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা সরকারের কাজ।"
মামলাকারী কুকি সংগঠনের প্রবীণ আইনজীবী কলিন গঞ্জালভেসকে বেঞ্চ বলে, "হিংসা থামাতে আপনার কোনও পরামর্শ দেওয়ার থাকলে দিন। সকলের উদ্দেশ্য হওয়া দরকার হিংসা থামানো।"
প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের আজকের পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং বিচারপতিদের অনেকের জন্য তা শিক্ষণীয় বলে বিচার বিভাগের সঙ্গে যুক্ত একাংশ মনে করছেন। সাধারণত এই ধরনের মামলায় আদালত সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে সরব হয়ে নানা মন্তব্য করে থাকে। তাতে মামলাকারীরা উৎফুল্ল হয়।
আবার বহু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, বিচারপতিরা শুনানিতে সরকার বা কর্তৃপক্ষকে ভৎসর্না করলেও পরে আসল চিত্র ভিন্ন। মণিপুরে যেহেতু হিংসা এখনও পুরোপুরি থামেনি, তাই আদালত এখনই সরকারকে কাঠগড়ায় তুলতে চায়নি।
প্রধান বিচারপতি সরকারি আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার কাছে জানতে চান সরকার এখনও পর্যন্ত কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে। ইতিমধ্যে মণিপুরের মুখ্যসচিব হলফনামায় সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্তগুলির কথা শীর্ষ আদালতকে জানিয়েছেন।
প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ শুনে বিচার বিভাগের পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, আদালত মনে করছে এখনই প্রকাশ্য এজলাসে কোনও পক্ষের নিন্দা, ব্যর্থতা নিয়ে সরব হলে তা আর এক পক্ষকে আক্রমণাত্মক করে তুলতে পারে। তাতে হিংসা বেড়ে যাবে। আদালত আদতে কোনও অবস্থাতেই চায় না শুনানি হিংসাকে উসকে দিক।