অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতে পাঞ্জাবে বিজেপির ‘অসম মডেল’, দলের রাজ্য সভাপতি হলেন প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা সুনীল জাখর


ভারতে পাঞ্জাবে বিজেপির ‘অসম মডেল’, দলের রাজ্য সভাপতি হলেন প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা সুনীল জাখর।
ভারতে পাঞ্জাবে বিজেপির ‘অসম মডেল’, দলের রাজ্য সভাপতি হলেন প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা সুনীল জাখর।

আগামী ২০২৪-এ ভারতের লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বিজেপির সংগঠনে বিস্তর পরিবর্তন শুরু করেছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ-জেপি নাড্ডারা। সোমবার ৩ জুলাই তেলেঙ্গানা, পাঞ্জাব, ঝাড়খন্ড ও অন্ধ্রপ্রদেশের দলীয় সভাপতি বদল করেছেন তাঁরা।

এরমধ্যে তেলেঙ্গানা ও পাঞ্জাবের ব্যাপারে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ভোটমুখী তেলেঙ্গানায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডিকে রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, আরও কয়েকজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে সংগঠনের কাজে ফেরানো হবে, দেওয়া হবে রাজ্য সভাপতির মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ।

তেলেঙ্গানার পর পাঞ্জাব নিয়েও বিজেপির দিল্লির শীর্ষ নেতৃত্বের রণনীতি তাৎপর্যপূর্ণ। পাঞ্জাবের নতুন সভাপতি সুনীল জাখর প্রায় এক বছর আগে বিজেপিতে যোগ দিলেও এখনও তাঁর কংগ্রেস অতীত রাজনৈতিক পরিচিতি থেকে মোছেনি।

গত বছর বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস শিবিরের ভরাডুবির পর বিজেপিতে যোগ দেন প্রাক্তন এই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। পাঞ্জাবের তিনবারের বিধায়ক, একবারে সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ৬৯ বছর বয়সি সুনীল কংগ্রেসের নামজাদা নেতা প্রয়াত বলরাম জাখরের পুত্র। বলরাম দীর্ঘদিন কেন্দ্রের কৃষিমন্ত্রী ছিলেন। গত বছরই বিজেপি আর এক প্রাক্তন কংগ্রেসি ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহের সঙ্গে সুনীলকেও দলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য করে। এবার তাঁকে দেওয়া হল রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব।

অসমে বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ২০১৬-তে বিজেপি শিবিরে শামিল হওয়ার আগে পর্যন্ত ছিলেন রাজ্য কংগ্রেসের মুখ। সেবার রাজ্যে ক্ষমতা দখলে হিমন্তের যোগদান বিজেপির জন্য মহৌষধের কাজ করেছিল। ২০২১-এ হিমন্তকে মুখ্যমন্ত্রী করে দল। অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গে ‘অসম মডেল’ চালু করে মোদী-শাহ-নাড্ডারা তৃণমূল থেকে আসা শুভেন্দু অধিকারীকে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা করেছেন। এবার পাঞ্জাবেও অসমের পথে হাঁটল বিজেপি শিবির।

শিখ প্রধান পাঞ্জাবে হিন্দু সুনীলকে রাজ্য সভাপতি করে বিজেপি স্পষ্ট বার্তা দিল সেখানেও মেরুকরণ অস্ত্রেই বাজিমাৎ করতে চায় তারা। এই পরিবর্তন অবশ্যই লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে। পরের বিধানসভা ভোট আছে ২০২৭-এ। সুনীলকে বেছে নেওয়ার পিছনে হিন্দু ভোটের পাশাপাশি শাসক দল আপের ভূমিকাকেও বিবেচনায় রেখেছে বিজেপি। অকালি দল ক্ষমতায় থাকলে হয়তো হিন্দু নেতা সুনীলকে সামনে এগিয়ে দিত না। তিন কৃষি আইন নিয়ে বিবাদের জেরে অকালি দলের সঙ্গে বিজেপির দীর্ঘদিনের বোঝাপড়া ভেঙে গিয়েছে। তা আবার জোড়া লাগার সম্ভাবনা দেখা দিলেও আগের মতো বন্ধন হবে না, জানে দু-পক্ষই।

সুনীল জাখরকে বেছে নেওয়ার আরও একটি কারণ হল, তাঁর সঙ্গে সব সম্প্রদায়ের ভাল সম্পর্ক। এছাড়া দীর্ঘদিন কংগ্রেসের প্রথমসারিতে থাকায় রাজ্য-রাজনীতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল তিনি।

XS
SM
MD
LG