অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বন্দী নির্যাতনের ঘটনায় পাপিয়াকে কাশিমপুর থেকে কুমিল্লা কারাগারে স্থানান্তর


বন্দী নির্যাতনের ঘটনায় পাপিয়াকে কাশিমপুর থেকে কুমিল্লা কারাগারে স্থানান্তর
বন্দী নির্যাতনের ঘটনায় পাপিয়াকে কাশিমপুর থেকে কুমিল্লা কারাগারে স্থানান্তর

বাংলাদেশের গাজীপুরে অবস্থিত কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দীর কাছ থেকে টাকা আদায় ও অন্য বন্দীকে নির্যাতনের অভিযোগে, যুব মহিলা লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেত্রী কারাবন্দী শামীমা নুর পাপিয়াকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। সোমবার (৩ জুলাই) বিকাল ৫টায় তাকে বিশেষ নিরাপত্তায় কাশিমপুর কারাগার থেকে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হয়।

এ ঘটনার নিশ্চিত করেছেন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার (ভারপ্রাপ্ত) ওবায়দুর রহমান। এর আগে, এই ঘটনায় কারাগারের তিনজনকে শোকজ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ঘটনা তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারের সাবেক বন্দী রুনা লায়লা জানান, সিসি ক্যামেরা নেই এমন স্থানে নিয়ে, তার কাছে থাকা ৭ হাজার ৪০০ টাকা দিয়ে দেয়ার জন্য চাপ দেয় হাজতি (বিচারাধীন বন্দী) শামীমা নুর পাপিয়া ও তার সহযোগীরা। তিনি বলেন, “দিতে অস্বীকার করলে, তারা জোর করে সেই টাকা নিয়ে যায়। পরে পাপিয়া ও তার সহযোগীরা শিকল দিয়ে হাত-পা বেঁধে আমাকে মারধর করে।”

রুনা লায়লা একজন শিক্ষানবিশ আইনজীবী। তিনি গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া থানার কড়িহাতা গ্রামের আব্দুল হাইয়ের মেয়ে এবং মৃত এ কে এম মাহমুদুল হকের স্ত্রী। তিনি ঢাকার কোতোয়ালি থানার ৭৩৫ নম্বর মামলায় অভিযুক্ত। গত ১৬ জুন থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী ছিলেন রুনা লায়লা।

তিনি গত ২৭ জুন জামিনে মুক্তি পেয়ে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। রুনা লায়লার ভাই আব্দুল করিম গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের কাছে গত ২৫ জুন লিখিত অভিযোগ করেন। এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

আব্দুল করিম জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগে বলেন, তার বোন রুনা লায়লার কাছ থেকে ৭ হাজার ৪০০ টাকা কেড়ে নিতে, কারাগারে দায়িত্বে থাকা হাবিলদার ফাতেমা বেগম ও নাসিমা আক্তার এবং হাজতি ও কয়েদিসহ শামীমা নুর পাপিয়া, সোনালী, আনন্দিকা, অবন্তিকা ও নাজমা তাকে নির্যাতন করে।

একপর্যায়ে তিনি রক্তবমি করেন এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। জ্ঞান ফেরার পর আবার তাকে পেটানো হয়। বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

এই নির্যাতনের অভিযোগের পর পাপিয়াকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার (ভারপ্রাপ্ত) ওবায়দুর রহমান জানান, “সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার কারণে কারাগার অভ্যন্তরে শৃঙ্খলা রক্ষা ও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বন্দী শামীমা নুর পাপিয়াকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে।”

এ ঘটনায় তিনজনকে শোকজ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। যাদের শোকজ করা হয়েছে, তারা হলেন; কারাগারের জেলার ফারহানা আক্তার, ডেপুটি জেলার জান্নাতুল তায়েবা ও মেট্রন হাবিলদার ফাতেমা।

XS
SM
MD
LG