অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতের উত্তর-পূর্বের মণিপুরে শান্তি ফেরাতে কংগ্রেস সভাপতির দাবি বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীকে অপসারণের


ভারতের উত্তর-পূর্বের মণিপুরে শান্তি ফেরাতে কংগ্রেস সভাপতির দাবি বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীকে অপসারণের।
ভারতের উত্তর-পূর্বের মণিপুরে শান্তি ফেরাতে কংগ্রেস সভাপতির দাবি বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীকে অপসারণের।

রাজধানী দিল্লিতে শনিবার ২৪ জুন ভারতের উত্তর-পূর্বের জনজাতি দাঙ্গায় বিধ্বস্ত মণিপুর রাজ্য নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে ঐকমত্যে পৌঁছনো যায়নি। একাধিক বিরেধী দল মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে এন বীরেন সিংহকে সরানোর দাবি তোলে। পরদিন রবিবার ২৫ জুন বীরেন সিংহ-র সঙ্গে দিল্লিতে একান্তে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

সোমবার ২৬ জুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে মণিপুর পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন শাহ। আর তারপরই কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে সোমবার দাবি তুলেছেন মণিপুর নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করার আগে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহকে আগে পদ থেকে সরাতে হবে।

কংগ্রেস সভাপতির বক্তব্য, "প্রধানমন্ত্রী মণিপুর সমস্যার শুরুর ৫৫ দিন পরও একটি শব্দ উচ্চারণ করেননি। তিনি যদি এখন কোনও পদক্ষেপ করতে চান তাহলে প্রথমেই বীরেনকে সরান। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীকে রেখে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।"

এদিকে, রাজনৈতিক মহলে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বদলের জল্পনা ছড়াতে শুরু করেছে। রবিবার দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে ইম্ফলে ফিরে বীরেন সিংহ দাবি করেন, কেন্দ্র ও রাজ্য যৌথভাবে মণিপুর পরিস্থিতি সামলাতে সক্ষম। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর এই মর্মেই কথা হয়েছে। কিন্তু তাঁর মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে থাকা বা না থাকা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি বীরেন।

বিজেপি শাসিত এই রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী বদলের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে খোদ বিজেপি বিধায়কদের একাংশ বীরেনের অপসারণ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ায়। বিজেপির দশ বিধায়কের দল এখন দিল্লিতেই রয়েছেন। তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চেয়ে অপেক্ষা করছেন। দিল্লিতে রয়েছেন কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইবোবি সিংহও। তিনিও বীরেনের অপসারণ চান।

বিজেপি সূত্রে খবর, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও বীরেনের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বদলের প্রশ্নে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে ভাবাচ্ছে ভিন্ন প্রশ্ন। এর আগে পার্টি দলীয় স্বার্থে একাধিক রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী বদল করেছে। কোথাও বয়সের কারণে, কোথাও সরকারি কাজে গতি আনার লক্ষ্যে। কিন্তু কোথাও মুখ্যমন্ত্রীদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ছিল না।

বীরেনের ক্ষেত্রে সমস্যা হল মণিপুরে জাতি দাঙ্গায় প্রায় ১২০জন নিহত হয়েছেন। হাজার পঞ্চাশ পরিবার এলাকা ছাড়া। আহত অসংখ্য। এই পরিস্থিতির দায় নিয়ে বীরেনকে সরানো হলেও ব্যর্থতার বোঝা গোটা দলের উপর এসেই পড়বে। বিজেপি নিজের দলের মুখ্যমন্ত্রীকে এমন গুরুতর অভিযোগের মুখে সরালে বিরোধীরা আরও জোর পেয়ে যাবে বলে পার্টির একাংশের মত।

তাই ভিন্ন মত হল, প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ করে যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। যদিও তাতেও দলের ঝুঁকি কম নয়, মনে করছে রাজনৈতিক মহল। দলের একাংশের মত হল, প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের পরও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে অস্বস্তি বাড়বে মোদীর, সঙ্গে গোটা দলেরও। উত্তর-পূর্ব থেকে লোকসভা ভোটে বিজেপি নব্বই ভাগ আসন দখলের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। আর মোদীই দলের মুখ। তাই মণিপুরকাণ্ডে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ উঠুক চাইছেন না বিজেপি নেতাদের অনেকেই। বিশেষজ্ঞদের মত সেইজন্যই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মণিপুর নিয়ে একটি শব্দও এখনও পর্যন্ত বলেননি।

XS
SM
MD
LG