ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি), বাংলাদেশের ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড-কে ৫ কোটি ডলার ঋণ প্রদান করছে। এই ঋণ কোভিড-১৯ মহামারীর প্রভাব কাটিয়ে উঠতে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের উদ্যোগকে (এসএমই) সহায়তার জন্য দেয়া হচ্ছে।
আইএফসি-এর এই বিনিয়োগ, চাকরি সংরক্ষণে অবদান রাখতে এবং ব্র্যাক ব্যাংকের এসএমই আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক গ্রাহকদের কার্যকরী মূলধন এবং বাণিজ্য অর্থায়নের প্রয়োজনীয়তাকে সহযোগিতা করবে। আর,এর জন্য ব্যাংকটির প্রয়েজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার তারল্য আনবে এই বিনিয়োগ।
আইএফসি বলেছে, ফেব্রুয়ারি-তে প্রাইম ব্যাংক-কে অনুরূপ ঋণ দেয়া হয়েছিলো। সেই ঋণের সঙ্গে, এই বিনিয়োগও বাজারে একটি ইতিবাচক সংকেত পাঠাবে এবং স্থানীয় ব্যাংক ও এসএমইগুলোর বৈদেশিক মুদ্রার অর্থায়নের চাহিদাকে সমর্থন করার জন্য অতিরিক্ত আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে অবদান রাখবে।
চলমান জনস্বাস্থ্য সংকটের সময়, কোম্পানিগুলোকে সহায়তা করার জন্য আইএফসি’র ৮০০ কোটি ডলার বৈশ্বিক কোভিড-১৯ প্রথম অগ্রাধিকার অর্থায়ন সুবিধার অংশ এই ঋণ প্যাকেজ। এই নতুন বিনিয়োগ কোভিড-১৯ প্রতিরোধে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সলিউশন (ডব্লিউসিএস) প্রোগ্রামের অধীনে পরিচালিত।
এটা, উদীয়মান-বাজারের ব্যাংকগুলোকে বিশ্বব্যাপী ২০০ কোটি ডলার প্রদান করছে। বিনিয়োগটি তাদের সংগ্রামী সংস্থাগুলোকে সমর্থন করতে সক্ষম করছে। এই প্রকল্প, ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রাইভেট সেক্টর উইন্ডো, ব্লেন্ডেড ফাইন্যান্স ফ্যাসিলিটি দ্বারা সমর্থিত; যা আইএফসি’র ডব্লিউসিএস প্রোগ্রাম-এ সহায়তা প্রদান করছে।
ব্র্যাক ব্যাংক বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম বেসরকারি ব্যাংক এবং দেশের একমাত্র এসএমই-কেন্দ্রিক ব্যাংক।ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও সেলিম আর এফ হুসেন বলেছেন, “আমাদের এসএমই এবং কর্পোরেট গ্রাহকরা কোভিড-১৯ এর বিঘ্নিত প্রভাব থেকে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। বৈদেশিক মুদ্রার অপর্যাপ্ত প্রাপ্যতা তাদের নিয়মিত ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করেছে।”
আইএফসি-এর দক্ষিণ এশিয়ার পোর্টফোলিও ম্যানেজার জুন ইয়ং পার্ক বলেছেন, “আইএফসি বাংলাদেশের মতো রপ্তানি নির্ভর অর্থনীতিতে ব্যাংকিং খাতকে সহায়তা করছে; যেগুলো বিভিন্ন সামষ্টিক অর্থনৈতিক এবং ভূ-রাজনৈতিক প্রতিকূলতার কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস-এর সম্মুখীন হয়েছে।”
আইএফসি ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশে বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধি বাড়াতে, ৩৬০ কোটি ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে।যার ফলে দেশটির নাগরিকদের জন্য কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে।এছাড়া, কোভিড-১৯ সংকটের শুরু থেকে আইএফসি বাংলাদেশের ব্যাংক ও কোম্পানিগুলোকে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সলিউশন এবং তারল্য সহায়তায় ৩৬ কোটি ডলার প্রদান করেছে।
বাংলাদেশ, ভুটান এবং নেপালের জন্য আইএফসি কান্ট্রি ম্যানেজার মার্টিন হোল্টম্যান বলেন, “মহামারীর প্রভাবের সঙ্গে লড়াই করার দীর্ঘ তিন বছর পর, বাংলাদেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো চ্যালেঞ্জিং বাজার পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে। আইএফসির লক্ষ্য হলো, বাংলাদেশকে পুনরুদ্ধারে সাহায্য করার প্রচেষ্টা করা এবং একটি স্থিতিস্থাপক মহামারী পরবর্তী অর্থনৈতিক ল্যান্ডস্কেপ গড়ে তোলা।”