বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট পাস করেছে। এই বাজেটে, জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ, আর বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে প্রায় ৬ শতাংশ। সোমবার (২৬ জুন) জাতীয় সংসদে এই বাজেট পাস করা হয়।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, ১১ লাখ ১০ হাজার ৮৪০ কোটি টাকার বরাদ্দ চেয়ে বরাদ্দ-করণ বিল ২০২৩ উত্থাপন করলে, তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে, সংসদ কিছু পরিবর্তনসহ অর্থ বিল-২০২৩ পাস করেছে জাতীয় সংসদ।
সরকারের প্রয়োজনীয় উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন ব্যয় মেটানোর জন্য অর্থ বরাদ্দে, সংসদের অনুমোদনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় উত্থাপিত প্রস্তাব-এর পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা অনুদানের জন্য ৫৯টি দাবির মাধ্যমে স্ব স্ব মন্ত্রণালয়-এর ব্যয়-যৌক্তিকতা পেশ করেন।
এর আগে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ৫৯টি দাবিতে, বিরোধী সদস্যদের মোট ৫০৩টি কর্তন প্রস্তাব কন্ঠভোটে প্রত্যাখ্যান করে জাতীয় সংসদ। জাতীয় পার্টি ও গণফোরামসহ মোট ১০ জন সংসদ সদস্য বাজেটে তাদের ছাঁটাই প্রস্তাব পেশ করেন।
ছাঁটাই প্রস্তাব উত্থাপন করা সংসদ সদস্যরা হলেন; কাজী ফিরোজ রশীদ, রুস্তম আলী ফরাজী, মুজিবুল হক, ফখরুল ইমাম, পীর ফজলুর রহমান, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, বেগম রওশন আরা মান্নান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, মোকাব্বির খান ও রেজাউল করিম বাবলু।
পরে, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী দুপুরের খাবারের বিরতি না দিয়ে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অনুদানের দাবি পাসের প্রক্রিয়া দ্রুততর করেন। বরাদ্দ বিল পাস হওয়ার সময় বিরোধী ও স্বতন্ত্র সাংসদরা অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা বিলটি পাস করতে আপত্তি তোলেননি।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ১ জুন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য, ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছন। এই আকার জিডিপির ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। বাজেটে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, জ্ঞানভিত্তিক, এবং ২০৪১ সালের মধ্যে 'স্মার্ট বাংলাদেশ' নিশ্চিত করার নীতির প্রতিফলন রয়েছে।
বাজেটে, পরিচালন ও অন্যান্য খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে রয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। মোট রাজস্ব ধরা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে, ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং ৭০ হাজার কোটি টাকা অন্যান্য উৎস থেকে সংগ্রহ করা হবে।
এদিকে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি দাঁড়াবে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ। মোট ঘাটতির মধ্যে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এবং ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা বাইরের উৎস থেকে অর্থায়ন করা হবে।