অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

সংখ্যালঘু সম্প্রদায় কোথাও গুরুত্ব পায় না: সংবাদ সম্মেলনে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়


হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। 
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। 

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকেরা কোথাও গুরুত্ব পায় না বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। শুক্রবার (২৩ জুন) সকালে, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের এক সংবাদ সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, “দুঃখজনক হলেও সত্য যে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকেরা আদালত বলেন আর প্রশাসন বলেন, কোথাও গুরুত্ব পায় না। এক কথায় বলা যায়, বাংলাদেশে পাত্তা পায় না।” গয়েশ্বর চন্দ্র রায় অভিযোগ করে বলেন, “নিরাপত্তাহীনতার কারণে, বাংলাদেশ থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ক্রমান্বয়ে প্রস্থান করছে।”

তিনি বলেন, “১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা সব ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার লোক একসঙ্গে যুদ্ধ করেছিলাম। পাকিস্তানিদের যে অত্যাচার-নির্যাতন-শোষণ-বৈষম্য, ধর্মীয় বৈষম্যের প্রেক্ষাপটে যে আচরণ করতো; সেটা সুষ্ঠু রাজনৈতিক রাষ্ট্রের জন্য যথেষ্ট নয় এবং সেই চেতনাবোধ থেকেই বাংলাদেশ স্বাধীনতার পথে গিয়েছিলো।”

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “কিন্তু আমরা দেখলাম যে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর, পালাক্রমে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে, বিশেষ করে দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী হিন্দু সম্প্রদায়, তারা ক্রমান্বয়ে প্রস্থান করছে।অর্থাৎ, ১৯৬৪ সালে দাঙ্গায় মানুষ যেমন দলে দলে একসঙ্গে মিছিল করে দেশত্যাগ করেছে, তা নয়। প্রতিদিনই যাচ্ছে, সেটা আমরা হয়তো অনুমান করতে পারছি না।”

তিনি বলেন, “যখন পরিসংখ্যান আসে, দেখা যায় যে ক্রমান্বয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের সংখ্যা কমতে থাকে। এক সময়ে, ৬০ এর দশকে, বাংলাদেশে ভূখণ্ডে ৩৭ শতাংশ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক বাস করতো। এখন এটা ১০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। তার মানে এভাবে কমছে, ক্রমান্বয়ে তারা যাচ্ছে।”

এর কারণ তুলে ধরে গয়েশ্বর রায় বলেন, “সামাজিক নিরাপত্তা, তাদের যে নাগরিক অধিকার সংবিধানে আছে, সেটা থেকে বঞ্চিত এবং প্রশাসনের কাছে কোনো অভিযোগ করলে তারা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অভিযোগগুলো খুব একটা গুরুত্ব দেয় না এবং এড়িয়ে চলে। সংখ্যালঘুদের যে নাগরিক অধিকার আছে, তাদের নিরাপত্তার বিষয়টা আছে, সেগুলো প্রশাসন তদারকি করে না।”

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরো বলেন, “আজকে পার্শ্ববর্তী একটি গণতান্ত্রিক দেশ ভারতবর্ষ। আমাদের দেশের হিন্দুরা সেকেন্ড হোম হিসেবে ভারতকে বেছে নেয়। একটা পূর্বঠিকানা থাকা দরকার, এখানে থাকা যাবে না, এই যে মনোবৃত্তিটা কেন সৃষ্টি হলো? সৃষ্টি হলো এই কারণে যে, রাষ্ট্রীয় প্রশাসন যন্ত্রের ব্যর্থতা, অর্থাৎ রাষ্ট্র সবাইকে এই বাংলাদেশটা যে সবার এই আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে।”

XS
SM
MD
LG