বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “বর্তমান সরকারের অধীনে, আগের মতোই জাতীয় নির্বাচনে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারবে না।” মঙ্গলবার (২০ জুন) বিকালে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, “সরকার আবারো আগের মতোই নির্বাচন করার পরিকল্পনা করছে। অথচ জনগণ ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে চায়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে তা কখনোই সম্ভব হবে না।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, তাদের দল দীর্ঘদিন ধরে একটি নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে; যাতে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে স্বাধীনভাবে প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে।
মির্জা ফখরুল বলেন, “যেসব রাজনৈতিক দল গণতান্ত্রিক রাজনীতি ও দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী এবং বাংলাদেশকে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়; তারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য যুগপৎ আন্দোলন করেছে।”
তিনি বলেন, “আমরা স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। বিএনপিকে ক্ষমতায় নিয়ে যাওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য নয়।” গণতন্ত্রের অভাবকে তিনি বাংলাদেশের প্রধান সংকট বলে উল্লেখ করেন। বলেন, “কারণ সরকার একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করে সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে।”
মূলধারার গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না বলে উল্লেখ করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, “সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করছে, বিভিন্ন সংবাদপত্র ও টিভি চ্যানেল বন্ধ করে দিয়েছে।” ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সাংবাদিকদের দমন ও হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আমরা কারো ভিসানীতি, নিষেধাজ্ঞা এসব বিবেচনা করে নির্বাচনে যাচ্ছি না। আমাদের নজর সংবিধানের দিকে, দেশের জনগণের দিকে।” ভারতকে সময়ের পরীক্ষিত বন্ধু বলে উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন। এর সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।”
ওবায়দুল কাদের বলেন, “আজকের বিশ্বে অনেক বিষয় রয়েছে; যুদ্ধ, মুদ্রাস্ফীতি ও জ্বালানি সংকট। সেখানে বাংলাদেশ বিষয়ে কোনো কথা হবে কিনা, এট নিয়ে ভারতের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়নি। কিংবা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমরা কোনো প্রস্তাব পাঠাইনি বাইডেনকে বোঝানোর জন্য।”
বাংলাদেশের কোন নির্বাচন নিয়ে ভারত কোনো প্রশ্ন তুলেছে বা হস্তক্ষেপ করেছে; এমন কথা তার জানা নেই বলে জানান ওবায়দুল কাদের। ওবায়দুল কাদের বলেন, “বাংলাদেশে কোনো কোনো মহল আছে, তাদের কাছে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের অর্থ হলো, আওয়ামী লীগ পরাজিত হবে। আওয়ামী লীগ পরাজিত হলে নির্বাচন সুষ্ঠু; এটা হচ্ছে বিএনপিসহ কিছু দলের মনোবাসনা।”
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সনাতন ধর্মালম্বীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, “আপনারা নিজেদের কখনো সংখ্যালঘু মনে করবেন না। অন্যান্য ধর্মের মতো আপনারাও দেশের প্রথম শ্রেণির নাগরিক।”