অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতের উত্তরাখন্ডের উত্তরকাশিতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার জেরে শহর ছাড়ছেন সংখ্যালঘুরা


ভারতের উত্তরাখন্ডের উত্তরকাশি গত কুড়ি দিন যাবত সাম্প্রদায়িক উত্তেজনায় অশান্ত হয়ে রয়েছে। হিন্দু ও মুসলিমদের একাধিক সংগঠন পরস্পর বিরোধী কর্মসূচি নেওয়ায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। উত্তরাখণ্ডে বিগত কয়েক বছর যাবৎ সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। তাতে নয়া মাত্রা যোগ করেছে উত্তরকাশি।

স্থানীয় সূত্রে খবর, নিরাপত্তার অভাব বোধ করায় সংখ্যালঘুদের অনেকেই দোকান, ব্যবসা বন্ধ রেখেছেন। শান্তি ফিরছে না দেখে কিছু কিছু পরিবার শহর ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত দিন কুড়ি আগে। একটি হিন্দু মেয়েকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে এক মুসলিম তরুণের বিরুদ্ধে। মেয়েটিকে সঙ্গে সঙ্গেই উদ্ধার করা হয়। কিন্তু সেই থেকে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোলমাল চলছেই। উত্তরাখণ্ডে লাভ জিহাদ বিরোধী আইন চালু করেছে রাজ্যের বিজেপি সরকার। উত্তরপ্রদেশে এই সংক্রান্ত আইনের আধারেই তৈরি হয়েছে উত্তরাখণ্ডের আইন। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, উত্তেজনা উত্তরকাশী থেকে অন্যত্রও ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। দুই সম্প্রদায়েরই শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর ধামীর সঙ্গে দেখা করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।

উত্তরকাশীর ঘটনাটি নিয়ে পথে নামে হিন্দুদের একাধিক সংগঠন। তারা বৃহস্পতিবার ১৫ জুন শহরে মহাপঞ্চায়েত বা বড় সমাবেশের ডাক দিয়েছে। পাল্টা সমাবেশের ডাক দিয়েছে মুসলিমদের একাধিক সংগঠনও। তারা সভা করবে ১৮ জুন। উত্তরকাশী পুলিশ কোনও পক্ষকেই সভা করার অনুমতি দেয়নি। তারা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে।

মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী বলেছেন লাভ জিহাদ কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। তিনি বলেন, "সরকার কোনও সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নয়। কিন্তু বাস্তবে বিগত কয়েক মাসে লাভ জিহাদের ঘটনা বেড়ে গিয়েছে।"

মুসলিমদের নিরাপত্তার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, 'কোনওভাবেই শান্তি বিঘ্নিত হতে দেওয়া হবে না। বছরের পর বছর পাশাপাশি বাস করে আসা দুই সম্প্রদায় এখনও যাতে একত্রে বাস করতে পারে সে ব্যাপারে সরকার সতর্ক আছে।"

প্রসঙ্গত, গত বছরের গোড়ায় উত্তরাখণ্ড গোটা দেশে খবরের শিরোনাম হয়েছিল দেরাদুনের সাধু সমাবেশ থেকে সংখ্যালঘু নিধনের ডাক দেওয়ায়। এজন্য হিন্দুদের অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান দেশের নানা প্রান্ত থেকে যাওয়া সাধুরা। সেই ভাষণের টেপ ফাঁস হওয়ার পরও দীর্ঘদিন আইনি জটিলতার অজুহাতে উত্তরখণ্ডের বিজেপি সরকার কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। পরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এফআইআর করে অভিযুক্ত সাধুদের গ্রেফতার করা হয়। তারা সকলেই এখন জামিনে মুক্ত।

XS
SM
MD
LG