ভারতে মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো এবার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাতেও সর্বভারতীয় মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। তবে মেডিক্যাল এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো সর্বভারতীয় পৃথক পরীক্ষা নেওয়া হবে না মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের ক্ষেত্রে। স্কুল স্তরের এই দুই পরীক্ষায় পরিবর্তন আনা হবে সিলেবাস, প্রশ্ন ও খাতা দেখার পদ্ধতিতে। উদ্দেশ্য পাশের হার ও প্রাপ্ত নম্বরের ক্ষেত্রে সমতা আনা।
ভারত সরকারের ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর এডুকেশন্যাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং দেশে স্কুল স্তরে সিলেবাস তৈরিতে পরামর্শ দিতে থাকে। এছাড়া তারা শিক্ষাপ্রদানের পদ্ধতি উদ্ভাবনের কাজও করে থাকে। কেন্দ্রের শিক্ষামন্ত্রক জাতীয় শিক্ষানীতির বাস্তবায়নে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনসিইআরটি’র আওতায় ‘পরখ’ (পারফরম্যান্স আসেসমেন্ট রিভিউ অ্যান্ড অ্যানালিসিস অফ নলেজ অফ হোলিস্টিক ডেভেলপমেন্ট) নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে।
পরখ দেশে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত সব বোর্ডের সিলেবাস, পরীক্ষার পদ্ধতি, প্রশ্নের মডেল এবং মূল্যায়ন ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে একটি অভিন্ন ব্যবস্থার সুপারিশ করবে। সেই অভিন্ন মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু করা গেলে বিভিন্ন রাজ্যে বোর্ড পরীক্ষায় পাশের হার এবং প্রাপ্ত নম্বরের মধ্যে ফারাক কমে আসবে।
এনসিইআরটি-র এক কর্তা নয়া ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে বলেন, গত বছর মেঘালয় এবং মধ্যপ্রদেশে ক্লাস টেনের বোর্ড পরীক্ষায় পাশের হার ছিল যথাক্রমে ৫৮.৫ এবং ৬৬ শতাংশ। সেখানে কেরল ও তেলেঙ্গানায় তা ছিল যথাক্রমে ৯৯.৮৫ এবং ৯৭.৬ শতাংশ। তিনি বলেন, নয়া ব্যবস্থা চালু হলে দেখা যাবে বছর কয়েকের মধ্যে সর্বভারতীয় হার বৃদ্ধি পেয়ে ৮০ শতাংশ হয়ে যাবে।
কেন্দ্রের বর্তমান সরকার প্রথম থেকেই শিক্ষায় সর্বভারতীয় মানদণ্ড চালু করার কথা বলছে। তাদের বক্তব্য, এক রাজ্যের পড়ুয়ারা আর এক রাজ্যে গিয়ে লেখাপড়া করতে চাইলে তাদের আগের পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর এবং মেধা যাতে বাধা না হয় সেটা নিশ্চিত করতেই এমন একটি ব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার। রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় বোর্ডের মধ্যেও শিক্ষার মানে সমতা ফেরানো দরকার।
সিবিএসই-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান অশোক গঙ্গোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, নয়া ভাবনায় স্কুল স্তরের পরীক্ষায় মূল্যায়ন আরও ভাল হবে। তিনি বলেন, অনেক বোর্ড অনাবশ্যক বেশি নম্বর দিয়ে থাকে। উত্তরপত্র মূল্যায়নে নয়া ব্যবস্থা চালু হলে এই সমস্যাও মিটবে। তাঁর কথায়, "অনাবশ্যক বাড়তি নম্বর শেষ পর্যন্ত কাজে আসে না। অর্জিত শিক্ষার সঙ্গে পরীক্ষার ফলাফলের বিস্তর ফারাক সমস্যা ডেকে আনে।"